• নরসিংদী
  • শনিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  শনিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

মাধবদীতে এসএসসি’র ফরম ফিলাপের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০:২৫ পিএম
মাধবদীতে এসএসসি’র ফরম ফিলাপের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর মাধবদীতে এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের ফরম ফিলাপের সুযোগ করে দেওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি মাধবদী থানাধীন নুরালাপুর ইউনিয়নের প্রতিভা আদর্শ বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের লোকজন। 

জানা যায়, প্রতিভা আদর্শ বিদ্যানিকেতন থেকে আগামী ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ১৭ জন শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষার শুরুতে তাদেরকে টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করানোর শর্তে প্রধান শিক্ষক সঞ্জয়ের নামে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রুবেল স্কুলের ৬ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়। এদের মধ্যে মাশরাফি নামক একজনের কাছ থেকে ৩ হাজার,জামিলের কাছ থেকে ২ হাজার,রিহানের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু টেস্ট পরীক্ষায় পর দেখা যায় একেক জনকে ৫/৭ বিষয়ে ফেল দেখানো হয়। 

এক মুরগিকে দ্বিতীয়বার জবাই করার জন্য পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় ওই সকল শিক্ষর্থীদের কাছ থেকে প্রতি বিষয়ে ৫ হাজার করে ৫ বিষয়ে ২৫ হাজার এবং ৭ বিষয়ে জন্য ৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার দাবী করেন। সেই সাথে দাবীকৃত টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকে। এছাড়াও প্রত্যেকের শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জোরপূর্বক কোচিং এর নামে ৫ হাজার টাকা করে কোচিং ফি আদায় করা হয়। 

এব্যাপারে জানতে বৃহস্পতিবার সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বললে তারা ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। বিদ্যালয়ে কোচিংরত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবে শিক্ষার্থীরা জানায়. ফরম ফিলাপের জন্য তারা প্রত্যেকে ৪ হাজার টাকা করে দিয়েছে। এছাড়াও পরীক্ষার আগ পর্যন্ত ৩ মাসে কোচিংয়ের জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। 

এসময় একজন শিক্ষক বলেন. রুবেল স্যার যখন ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যায় তখন আমরা সঞ্জয় স্যারকে এব্যাপারে থানায় একটি জিডি করার পরামর্শ দেই কিন্তু তিনি তা করেননি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থীর বাবা জানান, টেস্ট পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় এর আগে ৫ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর ও আমার মেয়েকে সাত বিষয়ে ফেল করিয়ে দেয়। বর্তমানে চরদিঘলদি হাইস্কুল থেকে নতুন করে পাশ দেখিয়ে ফরম ফিলাপের জন্য প্রতি বিষয়ে ৫ হাজার টাকা করে মোট ৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সাহা চাপাচাপি করছে। আমি ১০/১৫ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়েছি কিন্তু তিনি সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা কম নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। তাই এ বছর মেয়ের পরীক্ষা দেওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সাহার কাছ থেকে বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফরম ফিলাপের জন্য চার হাজার এবং এর পূর্বে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রুবেল টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করানোর কথা বলে ৬ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন আমাদের বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না হওয়ার কারণে অন্য বিদ্যালয়ের নামে ফরম ফিলাপ করাতে হয় বিধায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কিছু অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে হয়। 

অকৃতকার্যদের কাছ থেকে প্রতি বিষয়ে ৫ হাজার টাকা করে চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাদের কাছ থেকে টাকা চেয়েছি কিন্তু তারা তো আর আমাকে টাকা দিয়ে দেয়নি। আর তাদের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার বিষয়ে তারা কোন প্রকার প্রমাণ দেখাতে পারবে না বলে ও জানান তিনি। 

নরসিংদী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. মোবারুল ইসলামের কাছে ফরম ফিলাপের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের শাস্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ফরম ফিলাপ শুরু হওয়ার ১০/১৫ দিন পূর্বেই এ ব্যাপারে সতর্ক করে সকল স্কুলগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।'

তাছাড়া এবিষয়ে কোন বিদ্যালয়ে সরকারি নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

শিক্ষা বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ