স্টাফ রিপোর্টার : নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা (এনকেএম) হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস এসএসসির ফলাফলে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য ধরে রেখেছে । চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় ২৭৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭০ জন। শুক্রবার (২৮ জুলাই) সকালে অনলাইনে এসএসসির ফলাফল ঘোষণার পর এ তথ্য নিশ্চিত করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন।
প্রতিষ্ঠানটির ধারাবাহিক সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদির মোল্লা ও মিসেস নাছিমা মোল্লা।
এর আগে ২০২২, ২০১৭ ও ২০১৫ সালে শতভাগ পাসসহ শতভাগ জিপিএ ৫ পেয়ে দেশসেরা ফলাফল অর্জন করেছিল উক্ত প্রতিষ্ঠানটি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নাছিমা কাদির মোল্লা (এনকেএম) হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসিতে টানা শতভাগ পাসসহ ফলাফলের ভিত্তিতে প্রায় প্রতিবছরই বোর্ডে দেশসেরার স্থান দখল করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২৬৯ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৭০ শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে।
এর আগে গত ২০২২ সালে ২৬৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৬৬ জনই জিপিএ ৫ পেয়েছিল।
এ ছাড়া ২০২১ সালে ২৪৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২৩৭ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০২০ সালে ২১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ২০০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০১৯ সালে সালে ১৭১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ১৬৮ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল। ২০১৮ সালে ১৩৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাসসহ ১৩৭ জন জিপিএ ৫ পেয়েছিল এবং ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৬৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ ৫ পেয়েছিল।
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া ইলমা বিনতে জাকির জানায়, ‘মহামারি করোনার জন্য আমাদেরকে সবাই অটোপাস বলে অপবাদ দিত। আশা করছি এইবার আমাদের দেশসেরা ফলাফলে সেই অপবাদ মুছে যাবে। এই ফলাফলের জন্য আমাদের বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, সঠিক দিকনির্দেশনা, নিয়মিত ক্লাস, বিশেষ ক্লাস, গাইড টিচারের মাধ্যমে নিয়মিত হোম ভিজিট, টিউটরিয়াল ও মাসিক পরীক্ষার কারণেই এই ভালো ফল সম্ভব হয়েছে।’
নাছিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা বলেন, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বরাবরই ভালো ফল করছে। এবার শতভাগ পাসসহ দেশসেরা ফলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।
সারা দেশের সার্বিক ফলাফল বিশ্লেষণ করলে আশা করছি, আমরা দেশসেরা অবস্থানে থাকব। মূলত নরসিংদীর মতো মফস্বল শহরে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের অঙ্গীকার নিয়েই আমি ও আমার সহধর্মিণী নাসিমা বেগম স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আমি সব সময় চেয়েছি সুশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানবসম্পদে পরিণত হোক। যাতে আমাদের সমাজে সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত বেকার তৈরি না হয়।
তিনি আরো বলেন, আজকের এই সাফল্য শুধু এই প্রতিষ্ঠানের একার না। এই সাফল্য পুরো নরসিংদীবাসীর। এরই লক্ষ্যে আমার পরিচালনাধীন মজিদ মোল্লা ফাউন্ডেশন শুধু আমাদের পরিচালনাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, জেলার প্রায় ৩১৫টি স্কুল ও কলেজে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন বলেন, ‘একটি বিদ্যালয়ের ভালো ফলের মূলমন্ত্র হচ্ছে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সমন্বয়। আবদুল কাদির মোল্লা স্যারের ইনোভেটিভ চিন্তা-চেতনা, সময়োপযোগী সঠিক দিকনির্দেশনায় আমাদের এই ফলাফল অব্যাহত আছে। স্যারই প্রথম করোনার সময় ভ্রাম্যমাণ পাঠদানের প্রবর্তন করেন। এ বছরের শিক্ষার্থীরা যেহেতু করোনা মহামারির সময় পড়াশোনা থেকে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল, তাদের নিয়ে আমাদের শিক্ষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
উল্লেখ্য, নরসিংদীতে মানসম্মত শিক্ষা দানের অঙ্গীকার নিয়ে ২০০৮ সালে শহরের ভেলানগর এলাকায় থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা নরসিংদীতে তার এবং তাঁর স্ত্রী নাসিমা বেগমের নামে যৌথভাবে নাছিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ১৪৫ জন তরুণ ও মেধাবী শিক্ষক-শিক্ষিকার সার্বিক তত্ত্বাবধানে স্কুলটি কঠোর শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে স্কুলটির শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার ১৫৫ জন।