• নরসিংদী
  • মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

নরসিংদীতে লেখক গবেষক মোশাররফ হোসেন সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: রবিবার, ১২ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০:০৭ পিএম
নরসিংদীতে লেখক গবেষক মোশাররফ হোসেন সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
মোশাররফ হোসেন সরকার

এম. ওবায়েদুল কবীর: নরসিংদীতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক ও গবেষক মোশাররফ হোসেন সরকারের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে।

করিমপুর পাবলিক ইন্সটিটিউট, ছাত্র ও যুব ফোরামের আয়োজনে রোববার (১২মার্চ) বিকালে সদর উপজেলার করিমপুর পাবলিক ইন্সটিটিউটে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ড এর সাবেক সদস্য ওমর আলী।

এসময় লেখক ও গবেষক মোশাররফ হোসেন সরকারের সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও তাঁর লেখা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ইতিহাস ও গ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করেন  নরসিংদী মডেল স্কুলের প্রিন্সিপাল ও সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম শাহজাহান, নরসিংদী জজ কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট রেজাউল করিম বাছেদ, বাংলাদেশ সবুজ পরিবেশ আন্দোলন জেলা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি ও আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান রিপন, করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ড সদস্য হেলাল উদ্দিন, করিমপুর ছাত্র ও যুব ফোরামের উপদেষ্টা ইবনে আদল শশী, সভাপতি সুজন মিয়া ও হালিম মোল্লা প্রমুখ ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন মোশাররফ হোসেন সরকারের ছোট ভাই ও নরসিংদী সুইড বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন সরকার।

সভা সঞ্চালনা করেন বীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাওয়াদুল হক জাহিদ।

মরহুম বাহাউদ্দিন সরকারের সুযোগ্য সন্তান প্রয়াত মো. মোশারফ হোসেন সরকার করিমপুর গ্রামে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে ঐতিহ্যবাহি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দারিদ্রের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করে সরকারী চাকুরীরত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রে।

তিনি আশির দশকে করিমপুর পাবলিক ইন্সটিটিউট’র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তৎকালীন সময়ে সমগ্র চরাঞ্চলের তথা ৪টি ইউনিয়নের সাহিত্যমনা সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব, সুশিক্ষিত, রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় ভাবে প্রতিষ্ঠিতদের সমন্বয়ে প্রতি বৎসরে ২/৩টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। যেখানে খেলাধুলা, কবিতা আবৃতি, উপস্থিত বক্তৃতা, আলোচনা সভা সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজনের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলার চেষ্টা করেছেন।

  তিনি এ সকল সামাজিক কর্মকান্ডে সময় দিতে গিয়ে নিজের স্বচ্ছলতার কথা ভাবেননি। ভেবেছেন আমাদের সমাজ এলাকার তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার কথা।

তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চরাঞ্চলের খ্যাতনামা ব্যক্তিদের সমন্বয়ে তাদের স্বস্ব এলাকার বাস্তব চিত্র তুলে ধরার জন্য এবং জন্ম স্থানের প্রতি তাদের দ্বায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

তিনি আশির দশকে ‘মেঘনা’ নামে একটি স্মরণিকা ২১ ফেব্রুয়ারি ও বিজয় দিবস উপলক্ষে কমপক্ষে ২টি সংখ্যা প্রকাশ করতেন।

তিনি চাকুরীর পাশাপাশি, বাসায় এসেই প্রচুর পড়াশুনা করতেন, এমনকি একবার বেতনের পুরা টাকা দিয়ে বাংলা একাডেমি থেকে নিলামে স্বাধীনতার যুদ্ধের দলিল ১৬ খন্ড বই কিনে বাসায় আসেন।

তিনি চিন্তা করেননি সংসার কিভাবে চলবে। এই ঘটনাটি কেন্দ্র করে সংসারে ঝগড়াও হয়েছিল বলে জানা যায়।

তার পরও তিনি থেমে যাননি, উনার সংগ্রহকৃত প্রচুর বই এখানো রয়েছে। অত্যন্ত কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি সমগ্র নরসিংদী জেলার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে নরসিংদী জেলার মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস একটি বই প্রকাশ করেছেন।

পাশাপাশি শত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন।
চাকুরী জীবনের পাশাপাশি সকল সামাজিক কর্মকান্ডে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। পত্র-পত্রিকা সাময়িকীতে অনেক শিক্ষনীয় লেখা লিখেছেন যা জাতীয় পর্যায়ে প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। তার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে নরসিংদী থানা পাবলিক লাইব্রেরীর পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন।

জাগো নরসিংদী টুয়েন্টিফোর ডটকম 

সাহিত্য বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ