স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর রায়পুরায় খোলার দিনে পাঠদানকালে একটি হাই স্কুলের মাঠে ইজারা ছাড়াই অবৈধভাবে পশুর হাট বসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুলের মাঠে অবৈধ পশুর হাট বসানোর অভিযোগে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ২ যুবককে আটক করা হয়ে। পরে তাদের কাছ থেকে নামমাত্র জরিমানা আদায় করা হয়।
বুধবার (১২ জুন) দুপুরে ক্লাস চলাকালে উপজেলার পিরিজকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইজারা না নিয়েই বসানো হয় এ অবৈধ কোরবানির পশুর হাট।
অবৈধভাবে পশুর হাট বসানো অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রায়পুরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শফিকুল ইসলাম। এসময় হাটে রশিদ কাটা অবস্থায় দুই যুবককে আটক করে নিয়ে আসা হয়।
আটকৃতরা হলেন পিরিজকান্দি এলাকার কামাল মিয়ার ছেলে তানভীর (২৫) ও নিকচার মিয়ার ছেলে হৃদয় (২২)।
এব্যাপারে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোরবানি পশু হাট বসানোর অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়। এসময় দুইজনকে আটক করা হয়। পরে আটককৃত যুবকদের বিরুদ্ধে সরকারী আদেশ অমান্য করার অভিযোগে ১৮৮ ধারায় অভিযুক্ত করে প্রত্যেকের কাছ থেকে একহাজার টাকা করে সর্বমোট দুইহাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অবৈধ এই গরু হাট থেকে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে আটককৃত যুবকদের কাছ থেকে আদায়কৃত দুই হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। যা নামমাত্র জরিমানা বলে মনে করছেন অনেকেই অর্থাৎ গুরু পাপে লঘু দণ্ড।
জানা যায়, বুধবার স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম চালু ছিলো। পশুর হাট বসানোর কারণে দুপুর ১ টার দিকে স্কুল ছুটি দিয়ে দেয়।
এব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আজহারুল ইসলামের সাথে কথা বলতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিয়ে পূণরায় ফোন করলে তিনি বলেন, গরুর হাট বসানোর বিষয়ে কেউ আমার কাছে অনুমতি চায়নি বা নেয়নি। সকালে স্কুলে গিয়ে দেখি মাঠে কয়েকজন গরু নিয়ে এসেছে। শুনেছি হাটের বিষয়ে গতকাল এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।
কে বা কারা হাট বসিয়েছে এব্যাপারে কারো কাছে জানাতে চেয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন আমিতো নরসিংদী থাকি কাকে জিজ্ঞেস করবো। যেহেতু ক্লাস চলাকালে পশুর হাট তাই সকালে এসে যখন দেখলেন তখন কারো কাছে জানতে চেয়েছেন কিনা এমন পাল্টা প্রশ্নে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি উল্টো সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুর এলাহী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রতি বছরই এখানে ঈদের আগে একটি হাট বসে। এখানে শুধু মাত্র স্কুলের মাঠ ব্যাবহারের জন্য স্কুলের সভাপতির অনুমতি নিলেই হয়। কিন্তু হাট ইজারার বিষয়ে ইউএনও স্যার জানিয়েছেন অস্থায়ী পশুর হাটের জন্য ডিসি স্যারের কাছে আবেদন করা লাগবে। এ বিষয়টা তারা জানতো না। এরপরও হাটের পরিচালকরা আবেদন করেছিলো কিন্তু তখন ইজারা দেওয়ার সময় সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার কারনে অনুমতি পায়নি। যেহেতু মাইকিং করা হয়েছে পাবলিক আসছে, ক্রেতা বিক্রেতা আসছে অগত্যায় অনুমতি ছাড়াই হাট বসায়।
স্কুল চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট বসানো যায় কি না এবিষয়ে রায়পুরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সামালগীর আলম বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে কোনো পশুর হাট বসতে পারেনা। এরপরও যদি সরকার পশুর হাটের জন্য লিজ (ইজারা) দেয় তাহলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ একটু সেক্রিফাইস করতেই পারে। তবে এমনিতে একটা প্রতিষ্ঠানে হঠাৎ করে পশুর হাট বসানোর কোনো নিয়ম নাই। প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া বিক্রি করার জন্য স্কুল মাঠে একটা গরু ঢোকানোর সাধ্য নাই বিক্রি করারস। এমনটা হলে তিনি আইনগত সমস্যায় পড়ে যাবেন। স্কুল খোলা থাকার কথা জানান তিনি।