স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর রায়পুরায় প্রশাসনের নাকের ডগায় মেঘনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে দিনের পর দিন বালু উত্তেলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। এভাবে দিনের পর দিন মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে থাকলেও রহস্যজনক কারণে নিরব ভূমিকা পালন করছেন প্রশাসন- এমন অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
নদী ভাঙ্গনের আশঙ্কায় বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ভোরে মাইকে ঘোষণা করে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ভেলুয়ারচর এলাকাবাসী মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকালে ড্রেজারসহ এক মেশিনম্যানকে আটক করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভেলুয়ারচর রাসেল, হিরন, সবুর ও নীল মিয়াসহ কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মেঘনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। রাতে এলাকার সাধারণ মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে, চারদিকে নেমে আসে নিরব নিস্তব্দতা ঠিক তখন ড্রেজার মেশিন চালু করে শুরু হয় মেঘনার তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের কাজ।
সাধারণত রাত ১১ টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলে এই বালু উত্তোলন। বালুমহলের কোন রকম অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে ওই প্রভাবশালী মহলটি।
এলাকাবাসী এব্যাপারে একাধিকবার বাঁধা দিলে তাদের সেই বাধা না মেনে গত কয়েকদিন ধরে টানা বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। ক্রমাগত বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড়সহ বাড়ী-ঘর নদীগের্ভে বিলীনের আশঙ্কা থাকে।
ফলে এলাকাবাসী নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে বৃহস্পতিবার ভোরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে ড্রেজারটি আটক করে। এসময় ধাওয়া করে ড্রেজারের একজন মেশিন ম্যানকে ধরে ফেলে।
আটককৃত ড্রেজার মেশিনটি স্থানীয় শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যানের বলে শুনা গেলেও পরে বালু উত্তোলনকারী চক্রের সদস্য হিরণ মিয়ার মোবাইল ফোনে কথা বললে মিশিনটি তারা ভৈরব থেকে ভাড়া এনেছেন বলে জানায়।
শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রিয়াজ মোর্শেদ খান রাসেল বলেন, আমার ড্রেজার মিশিন আছে কথাটা সত্য তবে আমার দুটো ড্রেজারের একটি লোডিং ড্রেজার নয় দুটোই অন লোড ড্রেজার। ভেলুয়ারচর এলাকায় মেঘনা নদী থেকে আটককৃত ড্রেজারটি আমার নয়, আর যারা আপনাদেরকে এ তথ্যটি দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
এলাকার একটি কুচক্রী মহল অন্য এলাকা থেকে ড্রেজার ভাড়া এনে এসকল অপকর্ম করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
রায়পুরা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, এলাকাবাসী একটি ড্রেজার মেশিন আটক করেছে বলে শুনেছি তবে মেশিনের মালিকানা সম্পর্কে এখনো আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। ইউএনও স্যার নেই এমনটা ভেবে একটি মহল রাতের আঁধারে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করছে কিন্তু এলাকাবাসী ড্রেজারটি আটক করে তাদের সেই চেষ্টা রুখতে সমর্থ হয়ে।
রায়পুরা উপজেলা প্রশাসন অবৈধভাবে উত্তোলনকারীদের বিষয় জিরো টলারেন্স। এবিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
জাগোনরসিংদী/শহজু