হলধর দাস: র্যাব-১১ নরসিংদী'র একটি চৌকস অভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামী মুকুল (৪০)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। মুকুল নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলাধীন নিলক্ষা ইউনিয়নের বীরগাঁও কান্দাপাড়া গ্রামের ছন্দু মিয়ার পুত্র।
শুক্রবার তাকে নরসিংদী জেলা সদরের বৌয়াকুড় এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে আক্রান্ত করাসহ তিনটি খুনের মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে র্যাব-১১, সিপিএসসি, নরসিংদী'র ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মোঃ শামীম হোসেন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান যে, ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার নিলক্ষা ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত পার্থী আঃ হক সরকার এর সমর্থক এবং বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু গ্রুপের লোকদের সাথে নির্বাচন হওয়ার পর হতে নিলক্ষা ইউপি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করে।
যার জের ধরে ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র, লাঠি, বল্লম, টেটা, ককটেল বোমা, অগ্নেয়াস্ত্রসহ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
উক্ত দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল এবং পরে ৩০০ রাউন্ড শট গানের ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। তাতেও পক্ষদ্বয় দাঙ্গা হতে বিরত না হয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে দেশীয় টেটা, বল্লম, ককটেল বোমা নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা গুলি বর্ষণ করতে করতে পুলিশের টিমকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে।
দাঙ্গাকারীদের ককটেল বোমার স্প্রিন্টারের আঘাতে মোঃ আজাহারুল ইসলাম পিপিএম, অফিসার ইনচার্জ রায়পুরা, এসআই তোফাজ্জল হোসেন, এসআই জিয়াউর রহমান গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয় এবং এসআই আসাদুজ্জানের ডান হাতের বাহুতে ও বাম পায়ের গোড়ালিতে টেটাবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম প্রাপ্ত হয়।
পুলিশ সরকারী সম্পত্তি ও নিজেদের জানমালের রক্ষার্থে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ১৭৫ রাউন্ড চায়না রাইফেলের ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
উক্ত টেটাযুদ্ধের ঘটনায় ০৩ জন দাঙ্গাকারী নিহত ও ০৫ জন পুলিশ অফিসার গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্ল্যের সৃষ্টি হলে পুলিশ বাদি হয়ে রায়পুরা থানায় একটি মামলা করে, মামলানং-১৯(১১)১৬,ধারা-১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/৩৫৩/ ৩০২/১০৯/৩৪ পেনাল কোড।
অফিসার ইনচার্জ রায়পুরা থানা আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাবকে অনুরোধ করে। এরই প্রেক্ষিতে আসামীর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গত ০৫ আগস্ট-২০২২ তারিখ রাত সাড়ে ৮টায় নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন বৌয়াকুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মুকুল (৪০)’কে গ্রেফতার করে র্যাব-১১।
আসামীকে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। যার জিডি নং-৩৩৪ তারিখ ০৫/০৮/২০২২।
উল্লেখ্য, র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। নরসিংদী জেলায় সংঘটিত হত্যা, মাদক, চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীসহ সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ রুখে দিতে র্যাব-১১ অভিযান আরও জোরদার করেছে।