শেখ মানিক: নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের দরগারবন্ধ এলাকায় মামলার বাদী নিজেই আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিরোধপূর্ণ জমিতে জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে শাহাবুদ্দিন ওরফে কালাচান শেখ গংদের বিরুদ্ধে। মামলা নং ৭৪৯।
মামলার বিবাদী আকলিমা বেগম জানান, আমাদের জমিতে জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে কালাচান শেখ গংদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছে। এই নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা একাধিকবার শালিস দরবার করে ব্যর্থ হলে আমি শিবপুর মডেল থানায় ও দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৯ শে জুলাই ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক শামীম ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন এর উপস্থিতিতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কে সাথে নিয়ে এক সালিশ দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। দরবারে সার্ভেয়ার দ্বারা সরজমিনে জমি মাপামাপি করার পরে প্রমাণিত হয় আমার প্রতিপক্ষের নিকট আমার জমি রয়েছে।
তখন আমার জমি থেকে ২ ফুট বাধ দিয়ে একটি সীমানা নির্ধারণ করে দেন চেয়ারম্যান। আমি শান্তির লক্ষ্যে দুই ফুট জমি বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। এসময় বাদী ও বিবাদীর স্বাক্ষরিত এক আপোষ মিমাংসা লিখে নিয়েছেন। আমার প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যানের সালিশ দরবারকে উপেক্ষা করে আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা করেন। পরে ৩ আগস্ট থানার পুলিশ গিয়ে নোটিশ জারি করেন। আমার জমিতে জোরপূর্বক ভাবে দখল করে ঘর নির্মাণ করছেন। আবার উনি আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জোরপূর্বকভাবে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি আদালতের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
মামলার ১নং বাদী শাহাবুদ্দিন ওরফে কালাচান এর কাছে মামলা ও হামলার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,গত ২৯ শে জুলাই এখানে মারামারির কোনো ঘটনা ঘটে নি। ওই দিন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের উপস্থিতিতে সালিশ দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা দায়ের করে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জোরপূর্বকভাবে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাব পরে আদালত যা সিদ্ধান্ত দিবে মেনে নিবো। আমরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের শালীস দরবার মানি নাই, তাই আদালতে গিয়েছি।
মামলার সাক্ষী জাকির হোসেন জানান, আমাকে না জানিয়ে তারা আমাকে সাক্ষী বানিয়েছেন, গত ২৯ শে জুলাই ঘটনার দিন ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ওখানে শালীস দরবার হয়েছে। লাঠি শুঠা নিয়ে মারামারির কোন ঘটনা ঘটে নি। মামলায় যা উল্লেখ করা হয়েছে তা মিথ্যা।
শিবপুর মডেল থানার এসআই ইব্রাহীম জানান, বাদী ১৪৫ ধারায় মামলা করে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে গেলে আদালত বাদীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক শামীম মোল্লা জানান, জমির সীমানা বিরোধ নিয়ে গত ২৯ শে জুলাই শনিবার দরগারবন্ধ গ্রামে আকলিমার অভিযোগে বাদী ও বিবাদী, ইউপি সদস্য, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে সালিস দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। উভয়পক্ষেই আপোষ মীমাংসার জন্য স্বাক্ষর করেছিলেন। দরবারে সার্ভেয়ার দ্বারা সরজমিনে জমি মাপামাপি করে আকলিমা তার প্রতিপক্ষের নিকট জমি পায়।
পরে সকলের মতামতে একটা সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় কালাচান গং আমাদের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা দায়ের করেন। ১২ই আগস্ট দুপুরের জানতে পারলাম মামলার বাদি নিজেই আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ করছেন।