স্টাফ রিপোর্টার: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জের ফৌজিয়া ইসলাম ফাতেমা (৩০) নামে এক নারী’র সাথে বন্ধুত্ব করে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের জালে ফেঁসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে নাঈম মিয়া নামে এক পুলিশ সদস্য।
এমনই একটি অভিযোগ গত (২৮ডিসেম্বর-২০২৩ইং) নরসিংদীর বেলাব থানায় দায়ের করেন ওই ভোক্তভোগি পুলিশ সদস্য নাঈম মিয়া।
অভিযোগে জানা যায়, বিগত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে পরিচয়ের সুবাদে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানার ভায়ারচর গ্রামের সাইদুল ইসলামের মেয়ে ফৌজিয়া ইসলাম ফাতেমা (৩০) এর সাথে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে নাঈম মিয়া।
পরবর্তীতে ফাতেমা তার নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখায় নাঈম মিয়াকে, সেই প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে (১০মার্চ ২০২৩ইং) তাদের দেওয়া ঠিকানা মতো বসুন্ধরার একটি বাড়িতে দেখা করতে যায় নাঈম। এসময় নারীসহ তার সাথে থাকা অন্যান্য সদস্যরা তাকে আটক করে ফেলে, এবং জবরদস্তি করে মাদক সেবক করিয়ে অচেতন করে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন।
পরে তার জ্ঞান ফিরে আসলে সেগুলো দেখিয়ে তার কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা দাবী করে ওই চক্রের সদস্যরা। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলাসহ অচেতন অবস্থায় করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করার হুমকি দেন। পরে অনেক অনুরোধে টাকা পরে পরিশোধের শর্তে একশ টাকা মূল্যের ৩টি খালি স্ট্যাম্পসহ বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে।
সেই সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল সিম রেখে দেয় ওই চক্র। নাঈম মিয়া বাসায় এসে ওই নারীর সকল নাম্বার থেকে ব্লক করে দিলেও তারা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে টাকা দেওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে। তার পরেই টাকা না দেওয়ায় এক পর্যায়ে সিরাজগঞ্জ আদালতে পুলিশ সদস্য নাঈম মিয়ার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছে। এবং সেই মামলার হাজিরা দিতে গেলেও তার উপর ওই চক্রের সদস্যরা হামলার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নাঈম মিয়া জানান, ওই নারী স্বেচ্ছায় আমাকে ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র । ওই মহিলাসহ তার চক্রকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে পুলিশের কর্মকর্তাসহ রাজনৈতিক ব্যক্তি ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা জড়িত। তাদের মদদে সে এইসব করে অনেক মানুষকে বিপদে ফেলেছে ।
আর সে যে সময় উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে তখন আমি কর্মস্থলে ছিলাম। দুইটি মামলার তারিখেই কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলাম কিন্তু মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে তারা কোর্টে মামলা দায়ের করে । মামলা তদন্ত কর্মকর্তা কোনো প্রকার তদন্ত না করেই চক্রের পক্ষে মিথ্যা রিপোর্ট কোর্টে প্রেরণ করে ।
আর চক্রে পিবিআইয়ের একজন এডিশনাল এসপির সহযোগিতায় মোবাইল ট্র্যাকিং করে আমার সব তথ্য হাতিয়ে নেয়। আমার আত্মীয় স্বজনের মোবাইল নাম্বার ও তারা প্রতিনিয়ত ট্রাকিং করে আসছে। তার এসব কর্মকাণ্ডের কারণে আমি চাকরীতেও জয়েন করতে পারতেছিনা। আমি আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফৌজিয়া ইসলাম ফাতেমার সাথে কথা হলে সে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করে বলেন, সে যেসব অভিযোগ করতেছে তার কোনো প্রমাণ নেই যদি থাকতো তাহলে যখন আমি তার কিশোরগঞ্জ জেলার এসপি'র কাছে গেলাম তখন সে কেনো প্রমাণ দেখালো না, মামলার পর সিরাজগঞ্জে ম্যাজিস্ট্রেট এর সামনে যখন হাজির হলো তখন কেনো সে প্রমাণ দেখালো না।
এ বিষয়ে বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়েছি তবে, ঘটনা নরসিংদীতে ঘটেনি, ঘটনাস্থল ঢাকা, সেখানেই অভিযোগ করার দরকার ছিলো তার।