স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীতে হত্যা মামলা ও গাছে বেধে তরুণীকে নির্যাতনের পৃথক দুটি ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী পুলিশ।
নরসিংদীর পার্শবর্তী নারয়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানা এলাকার বাহাদুরপুর গ্রামের মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম (১৮) কে গত ১২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় নরসিংদীর মাধবদী থানা এলাকার বিরামপুর গ্রামের জনৈক আউয়ালের চায়ের দোকানের সম্মুখে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লোহার রড, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, ছুরি নিয়ে মোবারকের উপর অতর্কিকভাবে আক্রমণ করে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে তার প্রতিপক্ষ ইয়াছিন ও তার সাথী সঙ্গীরা।
পরে স্থানীয় লোকজন মোবারককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে জরুরী বিভগের নিয়ে এলে কতর্ব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১ টায় মোবারক মারা যায়। উক্ত ঘটনায় মাধবদী থানায় ১৩ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা রুজুর পর মাধবদী থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত এজহারনামীয় আসামী আরাফত (১৯), অলিউল্লাহ (২১) রাহাত (১৮) ও অলি (১৮)কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বাড়ী মাধবদী থানা এলাকায়।
উল্লেখ্য, গত ১০ নভেম্বর বিকাল অনুমান ৪টার সময় নিহত মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম তার কর্মস্থল থেকে রিক্সাযোগে বাড়ী ফেরার পথে বাহাদুরপুরে এলাকায় পাকারাস্তার সামনে এলে জনৈক ইয়াছিনের সাথে থুতু ফেলা নিয়ে দু’ জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং কয়েকদফা মারামারি হয়।
এ বিবাদকে কেন্দ্র করে ইয়াছিন ও তার অপরাপর সহযোগিরা পরিকল্পনা করে হত্যার জন্য সুযোগ খুজতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ইয়াছিন ও তার দলবল এ হত্যাকান্ডটি ঘটায়।
অপর দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দি ইউনিয়নের গনেরগাঁও এলাকার জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে জনৈক হযরত আলীর বাড়ীর আম গাছের সহিত জনৈক তরুণীকে বেধে মারপিট, নির্যাতন ও শ্লিলতাহানির ঘটনায় গত ১৩ নভেম্বর রাতে নরসিংদী সদর মডেল থানা পুলিশ গনেরগাঁও গ্রামের মজিবুর রহমান (৬০) কে গ্রেফতার করে।
গত ১০ নভেম্বর সকাল অনুমান ১০টার দিকে মজিবুর রহমান, মোঃ নাইম, মোঃ নাজমুলসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জন, তরুণীকে আমগাছের সাথে বেধে অমানসিক নির্যাতন করে। এসময় তরুণী ও তার বোনের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে প্রায় ঘন্টাখানেক চেষ্টার পর তাকে আমগাছ থেকে বাধন খুলে মুক্ত করেন। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এব্যাপারে গত ১৩ নভেম্বর নরসিংদী সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পর পুলিশ মজিবুরকে গ্রেফতার করে এবং অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে।
সোমবার নরসিংদীর পুলিশ সুপার কার্যালয় প্রাঙ্গনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আল আমিন। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শহীদুল ইসলাম সোহাগ, সদর মডেল থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভূইয়া, এসআই শামীমসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।