স্টাফ রিপোর্টার : নরসিংদীর বেলাবতে সড়কের সংস্কারে অনিয়মসহ নিম্নমানের কাজে বাধা দিতে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের নেতৃত্বে শ্রমিকরা মো. সফিকুল ইসলাম নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।
বর্তমানে ওই ছাত্রলীগ নেতা ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শুক্রবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২ টায় উপজেলার ধুকুন্দী পাহারঘাট হতে অলেক প্রধানের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা কার্পেটিং চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহত শফিকুল ইসলাম ধুকুন্দী গ্রামের মো. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। এবং আমলাবা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক।
স্থানীয়রা জানান, ধুকুন্দী পাহারঘাট হতে অলেক প্রধানের বাড়ি পর্যন্ত সড়কের সংস্কার কাজের কার্যাদেশ পায় এস এম কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শুক্রবার ওই সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছিল। সংস্কার কাজ চলাকালে দুপুর ১২ টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা সফিকুল ইসলাম এসে উন্নয়ন কাজের অনিয়ম হচ্ছে যা অত্যন্ত নিম্নমানের বলে অভিযোগ করেন।
এসময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোজাম্মেল হক মোল্লার নির্দেশে লেবার সর্দার মালেক মিয়ার ছেলে ফুল মিয়া, ঝাডু পাগলার ছেলে মোস্তফা, কাদির মিয়ার ছেলে শাহিন, জলিল মিয়ার ছেলে শিল্কুসহ ১০-১২ জন তার উপর চড়াও হয়।
এসময় উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে পিটিয়ে গুরূতর আহত করে। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতালে নিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তার চোখের ওপরের অংশে আঘাত লেগে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলার খবরে স্থানীয় ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসী দলবলসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার খবরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
আহত ছাত্রলীগ নেতা সফিকুলের বাবা মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমার ছেলে ছাত্রলীগের সাথে জড়িত। স্থানীয় লোকেরা এবং ছাত্রলীগের ছেলেরা আমার ছেলেকে এসে রাস্তার উন্নয়ন কাজ নিম্নমানের হচ্ছে এমনটা জানায় এবং এর প্রতিকারের কথা বললে আমার ছেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে কন্ট্রাক্টরকে কাজ ভালো করার অনুরোধ জানায়। এতে ঠিকাদার বাধ সাধে এবং তার নির্দেশে আমার ছেলের উপর হামলা করে। বর্তমানে আমার ছেলে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।আমি তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার চাই।
এস এম কনস্ট্রাকশনের মালিক মো. মোজাম্মেল হক মোল্লা বলেন, কে বা কারা তাকে মেরেছে আমি তা জানিনা। তবে যেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা দুঃখ জনক।
বেলাব উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিক বলেন, কাদির মিয়ার ছেলে শাহিনের নেতৃত্বে এবং ঠিকাদারের নির্দেশ সফিকুলের উপর হামলা হযেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশসহ বিভিন্ন কমসূচি নেওয়া হবে।
বেলাব উপজেলা প্রকৌশলী মো. সামছুল হক ভূঁইয়া বলেন, উন্নয়ন কাজের কোন অনিয়ম বা নিম্নমানের কোন কাজ হয়নি।অযৌক্তিক কিছু দাবি করেছে সেটা না দেওয়ার কারনে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছি।
বেলাব থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তাফিজ রহমান বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে যাই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।