
স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর বেলাব উপজেলার ভাবলা গ্রামে একই পরিবারের ৩জন হত্যার ঘটনায় বেলাব থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।নিহতের স্বামী আটককৃত গিয়াস উদ্দিন শেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করে রোববার রাতে নিহত রাহিমা বেগমের ভাই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।
গতকাল পিবিআই'র প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে নিহতের স্বামী আটককৃত গিয়াস উদ্দিন শেখ।
এবিষয়ে পিবিআই পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, 'দুই সন্তানসহ তিনজনকে হত্যার ঘটনায় গিয়াস উদ্দিন শেখকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী না দিলে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।'
এর আগে রোববার নিজ বাড়ির বসতঘর থেকে দুই শিশু সন্তান এবং তাদের মা'র রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রোববার সকাল সাড়ে নয়টায় উপজেলার ভাবলা গ্রামের শেখ বাড়ির পৃথক দুটি ঘর থেকে এই ৩জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ।
নিহতরা হলো ভাবলা গ্রামের রং মিস্ত্রী গিয়াস উদ্দিন শেখের স্ত্রী রাহিমা আক্তার (৩৫), ছেলে রাব্বি মিয়া (১২) ও মেয়ে রাকিবা (৬)।
এই হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাহিমা আক্তারের স্বামী রং মিস্ত্রী গিয়াস উদ্দিন শেখকে আটক করে পুলিশ। নরসিংদীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, নিহত রাহিমা বেগম পেশায় ছিলেন দরজী। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিলকিস বেগম নামে প্রতিবেশী এক নারী জামা সেলাই করার কাজে ওই বাড়িতে গিয়ে একটি বসতঘরে রহিমা বেগমকে ডাকাডাকি করেন।
এসময় তার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে বাড়ির অপর একটি ঘরে ঘুমন্ত দুই শিশু সন্তান রাব্বি শেখ ও মেয়ে রাকিবা শেখকে ডাকাডাকি করেন। তাদের কেউ ডাকে সাড়া না দেয়ায় আশেপাশের লোকজন গিয়ে দুই ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকে দুই সন্তানসহ মায়ের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়।
এসময় গৃহকর্তা রং মিস্ত্রী স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখ বাড়িতে ছিলেন না এবং ঘরের দরজা বাইরে থেকে চাপানো অবস্থায় ছিল। পরে স্থানীয়রা থানায় ও গৃহকর্তা গিয়াস উদ্দিন শেখকে এই হত্যার খবর জানান।
খবর পেয়ে বেলাবো থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই শিশুসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। শনিবার রাতের যেকোন সময় দুই সন্তানকে ভারি অস্ত্রের আঘাতসহ শ্বাসরোধে ও মাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
এসময় রং মিস্ত্রী গিয়াস উদ্দিন শেখ পেশাগত কারণে রাতে বাড়িতে ছিলেন না বলে জানালেও অসংলগ্ন কথাবার্তার কারণে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদীর পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় যৌথভাবে তদন্তে নামে পুলিশ ও পিবিআই। এসময় গৃহকর্তা গিয়াস উদ্দিন শেখের দেয়া তথ্যে গড়মিল পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে, সন্তানদের ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে আঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছোরা স্থানীয় একটি খাল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ ।