নাসিম আজাদ: নরসিংদীর পলাশে চোর সন্দেহে রাজন (১৬) নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাতে নিহত রাজনের বাবা ফাইজউদ্দিন বাদী হয়ে পলাশ থানায় মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় পুলিশ সাতজনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন।
সোমবার (১৫ মে) সন্ধায় মামলা দায়েরের তথ্য নিশ্চিত করেছেন পলাশ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ এমদাদুল হক।
এর আগে রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার পাইকসা গ্রামে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর রাজন পৌর এলাকার উত্তর চরপাড়া গ্রামের ফাইজউদ্দিন মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় আহত ইয়াছিন নামে আরেক কিশোর পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত আনুমানিক তিনটার দিকে ওই দুই কিশোর ঘোড়াশাল পাইকসা গ্রামে
সোবাহান মিয়ার বাড়ির পাশে সন্দেহজনক ঘুরাঘুরি করতে দেখে বাড়ির লোকজন তাদের আটক করে । পরে চোরসন্দেহে তারা রাজন ও ইয়াছিনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে।
মারধরের এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলেই রাজনের মৃত্যু হলে তারা মরদেহটি বাড়ির পাশের আশরাফ টেস্কটাইল মিলের একটি পরিত্যাক্ত কারখানার ঝোঁপে ফেলে রাখে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। আহত কিশোর ইয়াছিনকে উদ্ধার করে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
নিহত রাজনের বাবা এজাহারে বলেন, উল্লেখিত আসামীরা আমার ছেলে রাজন ও তার বন্ধু ইয়াছিন কে বিনা দোষে গাছের সাথে বেধে তাদের এলোপাথারী আঘাত করে পিটিয়ে আমার ছেলেকে হত্যা করে এরশাদের বাড়ির পাশে আশ্রাফ টেক্সটাইলের ভিতর একটি পরিত্যক্ত ছোট ভাঙ্গা ঘরের ভিতর প্লাস্টিকের ত্রিপাল দিয়ে লুকিয়ে রাখে। রবিবার সকালে পুলিশ গিয়ে আমার ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত রাজনের বড় ভাই মোশাররফ জানান, খুকু একজন মাদক ব্যবসায়ী। আমার ভাই রাজন মাদকের আস্তানা দেখে ফেলায় তাকে রাস্তা থেকে ধরে এনে খুকুর নেতৃত্বে তার লোকজন পিটিয়ে ভাইকে হত্যা করে পরিত্যক্ত একটি ঝোঁপে ফেলে রাখে। আমার ভাইকে আমি সন্তানের মতো করে বড় করেছি। আর সেই ভাইকে তারা পিটিয়ে হত্যা করেছে। খুকুসহ হত্যার সাথে জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার ও তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান।
পলাশ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ এমদাদুল হক জানান, 'রাজন হত্যার ঘটনায় দশ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও দুই-তিন জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১০ জন আসামীর মধ্যে প্রদীপ দাস, রমেন চন্দ্র দাস, আইয়ুব আলী, নাজমুল, সাদ্দাম, মোঃ উসমান গনি ও আব্দুর সোবহান নামে ৭ জনকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকী এরশাদ ওরফে খুকু, নুরুল হক ও সুমন মিয়া নামে অপর আসামিদেরকেও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।'
জাগোনরসিংদী/প্রতিনিধি