• নরসিংদী
  • রবিবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  রবিবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
website logo

পাঁচদোনায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে  জমি দখলের অপচেষ্টা


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:২৭ এএম
পাঁচদোনায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে  জমি দখলের অপচেষ্টা
জমি দখলের অপচেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর পাঁচদোনায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জমি নিজেদের দখলে নিতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে একদল ভূমিদস‍্যূ।

গত ২৮ জানুয়ারি নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম ইবনুল হাসান ইভান’র আদালতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের কামারচর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ৪ ছেলে সংঘবদ্ধভাবে রবিবার (৫ জানুয়ারি) এমনই অপচেষ্টায় ঐ জমিতে নির্মাণ কাজ করতে গেলে প্রতিপক্ষ এতে বাধা প্রদান করে। তাদের বাধার মুখে এবং এলাকার লোকজন জড়ো হতে থাকলে কাজ বন্ধ করে তারা সরে পড়ে।

এবিষয়ে ভিকটিম একটি অভিযোগ নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবে দাখিল করলে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম রবিবার ঘটনাস্থল পাঁচদোনা ইউনিয়নের কামারচর গ্রাম ঘুরে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মো. জয়নাল আবেদীনের পিতা মফিজ উদ্দিন মৃত‍্যূকালে তিনি সহ আব্দুস ছাত্তার নামে অপর এক ভাই ও মাফিয়া বেগম নামে তার এক বোন রেখে মৃত‍্যূবরণ করেন। পিতার মৃত‍্যূর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির আসমানদী মৌজাস্থ এসএ ৩৯ নং খতিয়ানের ৪ দাগে যার আরএস ৬৪ খতিয়ানের মোট সম্পত্তির ওয়ারিশ সূত্রে ৫ শতাংশ জমির মালিক হন জয়নাল আবেদিন।

পরবর্তীতে বোনের কাজ থেকে তার অংশের ২.৭৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে মোট ৭.৭৫ শতাংশ জমি ভোগ দখল করে আসছিল। কিন্তু এতে বাদসাধেন ভাই আব্দুস সাত্তারের সন্তানেরা। তারা ওই জমি হস্তগত করতে বিভিন্নভাবে পায়তারা করতে থাকেন।

এ বিষয়ে আব্দুস ছাত্তারের ছেলে আলতাফ হোসেন, আলম হোসেন, আওলাদ হোসেন ও আমির হোসেন স্থানীয় জমির দালাল আনোয়ার হোসেনের সহায়তা ওই জমি তাদের দাবী করে পাঁচদোনা ইউপি চেয়ারম‍্যানের স্মরণাপন্ন হন।

এবিষয়ে উভয়পক্ষকে নিয়ে চেয়ারম‍্যান বেশ কয়েকবার বসলেও কোন সমাধানে আসতে পারেনি।

পরবর্তীতে গত ২৮ জানুয়ারি পুনরায় বৈঠকে বসে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানসহ এলাকার অন্যান‍্যরা।

উল্লেখ্য যে, বিচার কার্যকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে ওই বৈঠকে পালতো নয় ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী ৪ নং ও ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও যে এলাকার ঘটনা সেই ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যকে উপস্থিত রাখা হয়নি। বৈঠকে বিচারকদের ভুলভাল বুঝিয়ে জয়নাল আবেদীনের পক্ষের কাগজপত্র না দেখি এক পেশে রায় ঘোষণা করে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।

রায় ঘোষণার পর মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলেরা ওই জমিতে লাগানো প্রায় শতাধিক কলাগাছসহ বেশ কয়েকটি কাঁঠ গাছ কেটে ফেলে।

পরে এই ঘটনায় উপায়ান্তর না দেখে অসহায় জয়নাল আবেদীন একই দিনে নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম ইবনুল হাসান ইভান’র আদালতের শণাপন্ন হয়ে ফৌ. কা. বি. ১৪৫ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে।

বাদী পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত জমিতে কোনরকম উন্নয়ন কাজ করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

সেই সাথে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে উক্ত জমিতে শান্তি -শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব এবং নরসিংদী সদর ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ারকে সরজমিন তদন্ত সাপেক্ষে দখল ও মালিকানা সম্পর্কে প্রতিবেদন পেশ করার নির্দেশ প্রদান করেন।

আদালতের এই নির্দেশ উপেক্ষা করে মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলেরা গত রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জোরপূর্বক জমিতে মাটি ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণের পাঁয়তারা শুরু করে।

এতে জয়নাল আবেদীন ও তার ছেলেরা বাধা প্রদান করে এবং নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করেন।

ভুক্তভোগী মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমার ভাইয়ের ছেলেরা মিলে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত আমার পৈত্রিক সম্পত্তি ও ক্রয়কৃত জমি দখলের পাঁয়তারা করছে।

এ নিয়ে তাদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের স্মরনাপন্ন হলে চেয়ারম্যান আমাদের কাগজপত্র পর্যালোচনা না করে তাদের পক্ষ অবলম্বন করে একতরফা রায় প্রদান করেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশে তারা আমার জমির শতাধিক কলাগাছ কেটে মাটি ভরাট শুরু করে।

তিনি বলেন, আমি উপায়ন্তর না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু তারা আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে জমিতে মাটি ভরাটে কাজ করতে গেলে আমরা বাধা প্রদান করি। এ অবস্থায় যে কোন সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।

এব্যাপারে নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাংবাদিকরা জানতে অভিযুক্তদের বাড়িতে গেলে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সদর দরজা বন্ধ করে সবাই সরে পড়ে।

পাঁচদোনা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান’র সাথে যোগাযোগ করলে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, 'এবিষয়ে ইতোপূর্বে ও অনেক দেন দরবার করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৮ জানুয়ারি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে রায় ঘোষণা করা হয়।'

তবে রায়ের পরবর্তী সময়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি করার বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান তিনি।

পাঁচদোনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ইউসুফ বলেন, 'এবিষয়ে উভয় পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেছেন। যেহেতু এ জমিতে আদালতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাই আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না ।'

জাগো নরসিংদী/শহজু

অর্থনীতি বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ