স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে একই বিভাগের তালিকাভুক্ত প্রথম শ্রেণির একজন ঠিকাদারকে লাঞ্চিত করা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারী সংস্থা জননী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল কাইয়ুম নামে মারধরের শিকার ওই ঠিকাদার এ অভিযোগ করেন।
বৃস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগকারী জানান।
অভিযোগে তিনি তার মালিকানাধীন জননী এন্টারপ্রাইজ ছাড়াও হাসান ট্রেডার্স নামে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামেও তিনি সিডিউল ক্রয়সহ ট্রেন্ডার ড্রপ করেন।
বৃহস্পতিবার ওই প্রতিষ্ঠানের নামে ৩০ লাখ টাকার একটি বিলে চেক ইস্যূ হওয়ার কথা ছিল। তার পায়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ঠিকাদার চেক'র খোঁজ নিতে লুঙ্গি পড়েই উক্ত দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামান'র কক্ষে যান এবং তার কাছ থেকে চেক রেডি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তার সামনে থাকা চেয়ার হাতে নিয়ে ঠিকাদার কাইয়ুমকে সজোড়ে আঘাত করে। এ অবস্থায় ওই কার্যালয়ের পিয়নসহ অন্যান্য লোকজন কাইয়ুমকে বের করে দিলেও নিজের ক্রোধকে সংবরণ করতে পারেনি প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান। তিনি তার পিছনে ছুটে গিয়ে সিঁড়িতে দুই দুইবার লাথি মারে। নিজের প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে যেতে থাকলে আসাদুজ্জামানও তার পিছনে দৌড়ে প্রধান ফটক পর্যন্ত চলে যায় বলে জানান ঠিকাদার কাইয়ুম ।
এলজিইডি কার্যালয়ের বাহিরে থাকা সিকিউরিটি গার্ডরা প্রকৌশলীকে কাইয়ুমের পিছন থেকে ধাওয়া দিয়ে ছুটে যেতে দেখেছে বলে জানান।
এঘটনার পর পর এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামান'র সাথে কথা বলতে তার কক্ষে গেলে তাকে কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি। পরে সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো: তোফাজ্জল হোসেন’র কক্ষে গেলে তিনি সাংবাদিকদের দেখে বাথরুমে চলে যায়। এসময় ওই কক্ষে চারজন ঠিকাদারদের দেখে তাদের সাথে আলাপচারিতা শুরু করে।
এ ব্যাপারে ওই কক্ষে অবস্থান করা জেলার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ফারুক সরকার'র কাছে জানতে চাইলে তিনি সবে মাত্র এসেছেন তাই এব্যাপারে তিনি কোন কিছু অবগত নন বলে জানান।
নির্বাহী প্রকৌশলী কর্তৃক ঠিকাদার লাঞ্চিত ও মারধোরের শিকার এমন প্রশ্নের জবাবে অপর ঠিকাদার কামাল হোসেন বলেন, এমন কোন ঘটনা তিনি জানেন না। সত্যিই যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তবে তা নিন্দনীয় বলে জানান তিনি।
এদিকে বাথরুমে কিছুটা সময় কালক্ষেপণ করার পর সেখান থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সাথে চটে বসেন সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো: তোফাজ্জল হোসেন’। তার কক্ষে দুইজন ঠিকাদারের বক্তব্য নেওয়া এবং কার অনুমতিতে কক্ষের ছবি তোলা হয়েছে এর কারণ জানতে চান তিনি।
এসময় সাংবাদিকরা তার কথা আমলে না নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাটি কিভাবে ঘটলো, কোথায় ঘটল এমন পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন। প্রশ্নের জবাবে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি। কিন্তু সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হন তিনি।
এব্যাপারে এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমার চাচা মারা গেছে। আমি এখন হাসপাতালে আছি' বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।