হলধর দাস: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চারাবাগ আইডিয়াল হাই স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য নেয়া বিভিন্ন শ্রেণির ২০২২ সালের কয়েক হাজার পাঠ্যপুস্তক বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এব্যাপারে জানতে এ প্রতিবেদকসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কয়েকজন সাংবাদিক গত ৩১ মে সরেজমিনে চারাবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথমে এমপিওভূক্ত কোন শিক্ষক পাওয়া যায়নি।স্কুলের আয়া লুৎফা জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন স্যার ট্রেনিংএ গেছেন। এর পরে যিনি আছেন তিনি টিফিনের সময়তো বাসায় খাইতে গেছেন।
সাংবাদিক স্কুলে আসার খবর পেয়ে কথা বলতে এগিয়ে আসেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোঃ মোছলেহ উদ্দিন ও সাবেক অভিভাবক সদস্য আবুল বাশার। কথা প্রসঙ্গে মোঃ মোছলেহ উদ্দিন বলেন,এই স্কুলের সভাপতি বিচারপতির বড় ভাই। এখানে কোন অনিয়ম নাই। তারা বলেন আগের হেড স্যার মনিরুজ্জামান অনেক অনিয়ম করেছে। তাকে আমরা বরখাস্ত করে দিয়েছি।
কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর টিফিন শেষে ভারপ্রাপ্ত প্রাধান শিক্ষকের পক্ষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক মোঃ গোলাম মোস্তফা।
তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের জন্য আনা বিতরণের অতিরিক্ত বই আছে না বিক্রি করে দেয়া হয়েছে?
তিনি সাংবাদিকদের বলেন,আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা যে পরিমাণ বই এনেছিলাম তার সবই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিলি করে দিয়েছি। পাশের কক্ষে কয়েকটা নষ্ট বই ছাড়া আমাদের কাছে অতিরিক।ত কোন বই নাই। অপর একজন শিক্ষক বলেন,আমাদের স্কুলের নামে আরও দুটি' বিদ্যালয় জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা দেয়। তাদের বইও আমরা বন্টন করে দিয়েছি।
উল্লেখ্য, আগেই গোপন তথ্যের ভিত্তিতে স্কুলের পিছনে পঞ্চাশোর্ধ কৃষক বকুল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় যে, সেখানে মাধ্যমিক শাখার ২০২২ সালের কয়েক হাজার পাঠ্যপুস্তক বই রয়েছে। বইগুলো গরুর ঘর আর রান্না ঘরের পাশের কক্ষে পড়ে আছে। বকুল মিয়া বইগুলো কোত্থেকে এনেছে বা কিনেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বইগুলো চারাবাগ আইডিয়াল হাই স্কুলের। স্কুলের দপ্তরী জাহাঙ্গীর মিয়া স্কুলের স্যারের কথা কইয়া আনুমানিক দুই মাস আগে বইগুলো রাইখা গেছে।
এব্যাপারে আজ বৃহস্পতিবার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গৌতম চন্দ্র মিত্র'র সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি বলেন, 'এটা করে থাকলে, অন্যায় করেছে। তদন্তে প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে তিনি রায়পুরা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা প্রদান করেন।