• নরসিংদী
  • রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

আরও ৪৫টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী 


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:৫২ পিএম
আরও ৪৫টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাগো নরসিংদী ডেস্ক: সারাদেশের ১৩টি জেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও ৪৫টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। 

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার সবার জন্য বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সবাই যাতে আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা পায় তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি তৃতীয় ধাপে এই কমিউনিটি ভিশন সেন্টারগুলোর উদ্বোধন করেন। যার মাধ্যমে এর সংখ্যা ১৩৫ এ পৌঁছেছে।

তিনি রাজধানীর শেরে বাংলা নগরস্থ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনষ্টিটিউটে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ভোলার চরফ্যাশন, বরগুনার আমতলী, চট্টগ্রামের বাঁশখালী এবং কক্সবাজারের পেকুয়ার কমিউনিটি ভিশন কেন্দ্রগুলো ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিল। সেখানে তিনি উপকারভোগীদের সঙ্গে পরে মত বিনিময়ও করেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে বাশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত প্রধান কার্যালয়ও উদ্বোধন করেন এবং এই কার্যালয়টি তাঁর দলের নীতি ও আদর্শ জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

৪৫টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার উদ্বোধনের পর তিনি বলেন যে, তিনি এর আগে দুই ধাপে ৯০টি কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন এবং সকল মানুষকে বিনামূল্যে আধুনিক ও উন্নত চক্ষু চিকিৎসার আওতায় আনার জন্য পর্যায়ক্রমে সারাদেশে কমিউনিটি ভিশন সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা তাঁর সরকারের রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা তৃণমূলে মানুষের দোর গোড়ায় চোখের মেডিকেয়ার পরিষেবা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিচ্ছি’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ভিশন সেন্টার থেকে চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই অন্ধ হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি জাতি হিসাবে আমাদের জন্য বড় অর্জন কারণ, অনেক মানুষ অন্ধত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছেন।’

স্বাস্থ্য খাতের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং সকল বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা তাঁর সরকারের পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে (ডিএমসি) ৫ হাজার শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করার পরিকল্পনা তার সরকারের রয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, আমরা কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মানোন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ এখনও শুরু করতে পারিনি। আশা করছি শিগগিরই কাজ শুরু করবে।

প্রধানমন্ত্রী প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে এর আগে ৯০টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার খুলেছিলেন যা বিনামূল্যে আধুনিক ও উন্নত চোখের চিকিৎসা প্রদান করে দক্ষিণ এশিয়ায় রোল মডেল হয়ে উঠেছে।
নতুন চালু হওয়া কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ২০টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০টি, রাজশাহী বিভাগে চারটি এবং খুলনা বিভাগে একটি রয়েছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের কার্যক্রম সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেন।

অনুষ্ঠানে কমিউনিটি আই ভিশন সেন্টার থেকে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা প্রদান সংক্রান্ত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

কমিউনিটি ভিশন সেন্টার থেকে এ পর্যন্ত ১৩,৩১,৫৭৭ ব্যক্তি চোখের চিকিৎসা নিয়েছেন এবং ২, ১০, ৮৬৮ জন কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে চশমা পেয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘ ২১ বছর পর ’৯৬ সালে প্রথমবারের মত সরকারে এসে তাঁর সরকার দলমত নির্বিশেষে সকলের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করলেও পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তা বন্ধ করে দেয়।

তিনি বলেন, ‘তাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট ছিল তারা বলেছিল যে, এই কমিউনিটি ক্লিনিক চালু থাকলে এখান থেকে যারা চিকিৎসা সেবা নেবে তারা সবাই আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবে। তারা ভোট পাবেনা, সেই ভয়ে এগুলো বন্ধ করে দেয়।’

‘কি অদ্ভূত চিন্তা, আপনারা একটু বিবেচনা করেন, আমরা কিন্তু সেগুলো চিন্তা করিনি। কমিউনিটি ক্লিনিকের ক্ষেত্রে সবাই চিকিৎসা পাবে। যে আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে সেও যেমন চিকিৎসা পাবে যে দেবে না সেও পাবে। কারণ, এটা আমি জনগণের জন্য করেছি। আর জনগণের জন্য যে সেবা সেটা জনগণের হাতে পৌঁছে দেয়াই আমাদের লক্ষ’ যোগ করেন তিনি।

২০০৯ সালে দ্বিতীয় বার সরকারে আসার পর থেকে তাঁর সরকারের প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত সারাদেশে গড়ে ওঠা ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মানুষ চিকিৎসা সেবাসহ ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে পাচ্ছে।

সরকার প্রধান বলেন, পাশাপাশি সে সময় চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৮ হাজার, কিন্তু তাঁর সরকার ৬৭ হাজারে উন্নীত করেছে। ২২ হাজার চিকিৎসক ও ৪০ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্স হাসপাতাল, বিভিন্ন আধুনিক হাপাতাল, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনষ্টিটিউটসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শিশু হাসপাতালগুলোকে উন্নতকরণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবাকে যুগোপযোগী করে দিচ্ছি।

তিনি বলেন, এই শিশু হাসপাতাল আমাদের প্রেেত্যকটা বিভাগে করা প্রয়োজন বলে আমি মনেকরি বা বিভাগীয় বিশ^বিদ্যালয় ও হাসপাতালগুলোতে শিশুদের বিশেষ যতœ ও চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। সেক্ষেত্রে বেসরকারি পর্যায়েও যেন হাসপাতাল গড়ে ওঠে। এ জন্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সামগ্রীর থেকেও তাঁর সরকার ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছে বলে বেসরকারি খাতেও অনেক উন্নতমানের হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি খাতে নার্সেস ইনষ্টিটিউট গড়ে উঠছে এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করছে এবং আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রাপ্তির ও উপলক্ষ ঘটছে।

তিনি এ সময় দেশের জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় সকলকে নিয়ম মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সকলে যদি নিয়ম মেনে চলে তাহলে আমরা সকলেরই যথাযথ স্¦াস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারবো।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা তাঁর সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারে ছিল বলে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তরিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমিউনিটি ভিশন সেন্টার আমরা স্থাপন করছি। একটা বেজ হাসপাতাল রেখে সেখান থেকে এসব সেন্টারগুলোতে টেলিকমিউনিকেশনের মাধ্যমে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই এই সুযোগ আমরা তৈরি করতে পেরেছি।

আমরা চাই আমাদের মানুষ অন্ধত্বসহ এ ধরনের নানা সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা লাভে যেন ব্যর্থ না হয়। সে জন্যই তাঁর সরকারের এই প্রচেষ্টার উল্লেখ করে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

পাশাপাশি সহযোগিতার জন্য ভারতের অরভিন্দু আই কেয়ার সেন্টারকেও তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'অন্ধজনে আলো দেওয়া আমাদের কর্তব্য। আশা করি সমগ্র বাংলাদেই পর্যায়ক্রমে আমরা এই ব্যবস্থা করে দেব।'

সূত্র : বাসস

জাতীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ