স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর শিবপুরে এক মাদ্রাসা ছাত্র বলাৎকারের শিকার হয়েছেন। আর এই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন মুফতি মোশাররফ হোসেন। একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম তিনি।
ওই মাদ্রাসারই হেফজখানার ১০ বছর বয়সী এক শিশু ছাত্রকে বলাৎকার করেছেন তিনি । গত রবিবার (৯ জুলাই) দুপুরে উপজেলার মধ্যকারারচর এলাকার জামিয়া মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এই বলাৎকারের ঘটনা ঘটে।
বলাৎকারের শিকার হওয়া ওই ছাত্রের বাড়ি উপজেলার চড়সুজাপুর গুপ্ত পাড়া এলাকায়। ওই ছাত্রের বাবা গত হওয়ায় মা অন্যত্র বিয়ে করে। তাই সে কুড়েরপার এলাকায় নানা মৃত মফিজ ডাক্তারের বাড়িতে খালা-খালুর সাথে থেকে পড়ালেখা করে।
অপরদিকে লম্পট মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মুহতামিম মুফতি মোশাররফ হোসেন'র বাড়ি মধ্যকারারচরের মদিনা জুটের মিলের পেছনে বালুর মাঠ এলাকায়। তিনি একাদ্বারে ওই হাফিজিয়া মাদ্রাসার ও হালিমা তুস সাদিয়া নামে একটি মহিলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। পাশাপাশি স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন।
জানা যায়, ঘটনার দিন দুপুরে জামিয়া মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মুফতি মোশাররফ হোসেন। বলৎকারের শিকার হওয়া হেফজখানার ওই ছাত্রকে তার রুমে ডেকে নেয়। পরে মুফতি মোশারফ হোসেন ছাত্রটির শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গে হাত ভুলাতে থাকে এক পর্যায়ে তার পরনে থাকা প্যান্ট খুলে তাকে বলাৎকার করে। এ সময় ছেলেটি চিৎকার দিতে চাইলে তার মুখচেপে ধরে। বলাৎকার এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য ছাত্রটিকে হুমকি ধমকি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় লম্পট মুফতি মোশাররফ।
পরে ঘটনাটি এককান দুই কান হয়ে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য লম্পট মুফতি মোশাররফ বায়তুল অজিফা জামে মসজিদ নামে যে মসজিদের ইমামতি করেন ওই মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে। মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি রফিক টাকা খেয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগে। ইমামতির পথ থেকে তাকে বাদ দেওয়ার জন্য মসজিদ কমিটির অনেকে বললেও কমিটির সহ-সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ তা থেকে বিরত রাখে সবাইকে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে মুফতি মোশাররফ হোসেন বলাৎকার শিকার হওয়া ওই ছাত্রের খালার বাড়িতে যায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তাদেরকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে অনেকভাবে বুঝিয়ে অবশেষে তাদের হাতে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে আসে। পরে বিষয়টি মিটমাটের জন্য রাতে ওই এলাকার কয়েকজন ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি বৈঠক (যা আইনিভাবে অবৈধ অর্থাৎ বলৎকারের ক্ষেত্রে গ্রাম্য সালিশ দরবার বা বৈঠকে কোন গ্রহনযোগ্যতা নেই) বসে।
বুধবার সকালে এই প্রতিবেদক সরোজমিনে জামিয়া মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় লম্পট মোশাররফ হোসেনকে মাদ্রাসায় না পেয়ে তার মোবাইলে ফোন করলে তার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার কথা বলেন। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেল ও তিনি মাদ্রাসাস্থলে উপস্থিত না হয়ে তার টাকায় কেনা লোকজনদেরকে মাদ্রাসায় পাঠিয়ে প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালায়। সেখান থেকে ফিরে এসে প্রতিবেদক বারবার লম্পট মোশাররফকে মোবাইলে ফোন করলেও সে আর ফোন করেনি।
জাগোনরসিংদী টুয়েন্টিফোর ডটকম/শহজু