স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আলমগীর হোসেন আলম (১৯) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এতে অন্তত পক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার চরাঞ্চলের বাঁশগাড়ি এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আলমগীর বাঁশগাড়ি এলাকার জহর আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হক সরকার ও বর্তমান চেয়ারম্যান রাতুল হাসানের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ জের ধরে সকালে দুপক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় আলমগীর নামে একজনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আহতদের রায়পুরা ও নরসিংদী সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আদিল মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন। আমরা ঘটনাস্থলে আছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় দুপুরে রায়পুরার বাঁশগাড়ী দিঘলিয়াকান্দি গ্রামে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন) সিদ্দিকুর রহমান।
এই সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, সংঘাত, সহিংসতা, আধিপত্য বিস্তার এগুলো কোনদিন শান্তি বয়ে আনে না। আপনাদের যেকোন সমস্যা সমঝোতার ভিত্তিতে, আলোচনার ভিত্তিতে আমরা সমাধান করতে চাই।
তিনি আরো বলেন, গতকাল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পাওয়ার পর গতকাল রাত থেকেই গ্রামটি আমাদের গোয়েন্দা নজরদারীতে ছিলো। এ ঘটনায় আলমগীর নামে একজন নিহত হয়েছেন। আরো ২-১ জন আহত আছে যাদেরকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠােনা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে পুলিশের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিহিত একব্যক্তিকে বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে তিনি পুলিশ সদস্য কি না এবিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বছরের ছাত্র আন্দোলনের সময় নরসিংদীতে জেলা কারাগার সহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানের থানা ভেঙে অস্ত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জাম লুট করা হয়েছিলো। ধারনা করা হচ্ছে ওই সময় বিভিন্ন অস্ত্রের পাশাপাশি দুর্বৃত্তরা এ ধরনের জ্যাকেট লুট করে এখন তারা এসব বিভিন্ন অপকর্মে ব্যবহার করছে। খুব দ্রুতই এসবের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাসহ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনার কথা জানান তিনি।
এসময় নরসিংদী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো: কলিমুল্লাহ, রায়পুরা থানার ওসি মো আদিল মাহমুদ, বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জসহ প্রায় শতাধিক পুলিশ ও নরসিংদী গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) উপস্থিত ছিলেন।