নিজস্ব প্রতিবেদক :
আজ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকন রায়পুরার চরাঞ্চলে আসছেন। তার সাথে নরসিংদী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুর এলাহীও আসার কথা রয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা রায়পুরায় আসবেন অথচ উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিষয়টি অবগত নন। খায়রুল কবির খোকনের আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রায়পুরার চরাঞ্চলে আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো উপজেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানান, খায়রুল কবির খোকন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। তিনি রায়পুরা আসবেন আর সেটা উপজেলা বিএনপিকে জানানো
সাংগঠনিক বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি। তাই খোকনে রায়পুরা আসা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল ও তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিএনপির এক গ্রুপ সভার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গতরাত থেকে উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টসহ রায়পুরা প্রবেশ মুখে নির্মাণ করা হচ্ছে তোরণ।
অপরদিকে সায়দাবাদ স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিতব্য খায়রুল কবির খোকনের ওই সভা বর্জনের ডাক দিয়েছে উপজেলা বিএনপি। ওই সভা বর্জনের ডাক দিয়ে রায়পুরা উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে 'দৃষ্টি আকর্ষণ' শিরোনামে একটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া রায়পুরা উপজেলা বিএনপির ওই ঘোষণায় বলা হয়, রায়পুরা উপজেলা বিএনপির নাম ব্যবহার করে একটি অসাধু মহল জেলা বিএনপির সম্মানিত নেতৃবৃন্দের নাম করে ১২ নভেম্বর সোমবার বাঁশগাড়ি এলাকায় একটি কর্মী সভার প্রচারণা চালিয়ে আসছিল কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আবার ওই সভাটি আওয়ামী লীগ নেতা শ্রীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খান রাসেল ও আলোচিত সিক্স মার্ডার মামলার প্রধান আসামি হানিফ মাস্টারের সাথে আঁতাত করে সায়দাবাদ স্কুল মাঠে স্থানান্তর করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। যা রায়পুরা উপজেলা বিএনপি জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করে এ ধরণের সভার কোন সত্যতা খুজে পাননি। তথাপি উল্লেখিত মহলটি বসে নেই। তারা বর্তমানেও সভা করার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে স্থানীয় সাধারণ নেতাকর্মীরা জেলা নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বিরুপ মনোভাব পোষণ করতে পারে এমনটাই মনে করছে উপজেলা বিএনপি। তাই উপজেলা বিএনপির পক্ষ ওই অসাধু মহলটি এই হীন তৎপরতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে উক্ত কর্মী সভা বর্জনের আহবান জানান।
এ ব্যাপারে রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, খায়রুল কবির খোকন ভাই আমাদের নেতা আমাদের অভিভাবক। তিনি আমাদের এলাকায় আসবেন এবং সবা করবেন এ ব্যাপারে আমরা অবগত নই। বিষয়টি খায়রুল কবির খোকনের কাছে তারা জানতে চেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু তিনি উপজেলা বিএনপিকে পাশ কাটিয়ে রায়পুরা চরাঞ্চলে আসছেন তাই এ বিষয়ে আর উনার সাথে কথা বলা হয়নি।
রায়পুরা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হযরত আলী ভূঁইয়ার সাথে কথা বললেন তিনি জানান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকন ভাই রায়পুরা চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে আসবেন সেখানে সভা করবেন গত এক সপ্তাহ যাবৎ একটি মহল এমন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গত দুইদিন আগে ওই মহলটি হঠাৎ করে স্থান পরিবর্তন করে সেটা সায়দাবাদ স্কুল মাঠে হবার ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা চালায়। খায়রুল কবির খোকন রায়পুরার চরাঞ্চলে আসবেন সেখানে সভা করবেন এ ব্যাপারে কোন পোস্টার অথবা লিফলেট আপনারা পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না কোন পোস্টার দাওয়াতপত্র আমরা পাইনি তবে লোকমুখে শুনতে পেয়েছি হারুন কবির খোকনের আগমনকে কেন্দ্র করে এলাকায় বেশ কয়েকটি তোরণ বা গেইট নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আশেপাশের এলাকা থেকে লোক আনা নেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি নৌকা ভাড়া করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, খোকন ভাই আমার নেতা, আমার অভিভাবক। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকায় যাবেন এটা আমার জন্য একটা খুশির সংবাদ। কিন্তু এই খুশির সংবাদটি এখন আমার জন্য দুঃসংবাদ। সাংবিধানিক নিয়মানুযায়ী খোকন ভাই রায়পুরা যাওয়ার সিদ্ধান্তে তিনি আমাদেরকে ডেকে বলতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে সম্পূর্ণ গোপন রেখেছেন। জানিনা কার পড়াশোনায় তিনি রায়পুরা আসছেন এবং সভা করবেন। তিনি যদি রায়পুরা আসেন এবং সেখানে সভা করেন তবে উপজেলা বিএনপিকে একটা প্রশ্নের সম্মুখীন দাঁড় হতে হবে। দলের মাঝে আসবে দ্বিধা বিভক্তি। দলের মাঝে দেখা দিতে পারে ফাটল। তাই আমি ছোট হয়ে উনার কাছে অনুরোধ করবো কারো প্ররোচনায় এমন কাজটি আপনি করবেন না।
এ ব্যাপারে নরসিংদী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন ও সদস্য মনজুর এলাহী এই দুজনের কাউকেই ফোনে পাওয়া যায়নি।
নরসিংদী জেলা বিএনপির এই দুই নেতাকে ফোনে না পেয়ে আয়োজক কমিটির রফিকুল আমীন ভুঁইয়া রুহেলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, জেলা বিএনপির নেতারা কে কোথায় যাবে না যাবে তার জবাব তারা দিবে। অন্য কারো রাইট নাই এবিষয়ে কিছু বলার।। তাছাড়া খায়রুল কবির খোকন রায়পুরা আসছেন একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কোন রাজনৈতিক সভা সমাবেশে নয়।