স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীতে শহর যুবদলের আহ্বায়ক ও সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাবেক এ.জি.এস মাহমুদ হোসেন চৌধুরী সুমনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদল নেতারা।
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে এযাবতকাল পর্যন্ত জেলার ছাত্রনেতাদের উদ্যেগে চিনিশপুরস্থ বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি এম এ জলিলের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শহর বিএনপির সভাপতি সরকারি কলেজের সাবেক জিএস গোলাম কবির কামাল।
লিখিত বক্তব্যে গোলাম কবির কামাল বলেন, নরসিংদী শহর যুবদলের আহ্বায়ক ও জেলা বি.এন.পি আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মাহমুদ হোসেন চৌধুরী সুমন বিএনপির একজন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা। ফ্যাসিষ্ট সরকারের শাসন আমলে বিগত ১৭ বছর আমলে রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে বহু মামলায় বছরের পর বছর কারাবন্দীসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শুধু তাই নয়, ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যানতে কারাগারে থাকাকালীন সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসার ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা তার হৃদপিন্ডে ৪টি রিং স্থাপন করায় প্রাণে বেঁচে যায় সে। অথচ ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোষরদের কথার উপর ভিত্তি করে দলের পরিক্ষীত একজন নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া নরসিংদী জেলা বিএনপির ত্যাগী নেতারা মর্মাহত হয়েছেন বলে জানান।
আবু তাহের মোহাম্মদ মূসা নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার হওয়ার সুবাদে রেলওয়ে মসজিদের সাধারণ সম্পাদকের এবং রেলওয়ে শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমএস আনোয়ার কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ রেলওয়ে মসজিদ মার্কেটের আয়ের টাকা আত্মসাৎ, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি মসজিদের ইমামকে চাকুরিচুৎ করার প্রতিবাদ করায় মাহমুদ হোসেন চৌধুরী সুমন তাদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির পথে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই মাহমুদ হোসেন চৌধুরী সুমনকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করে। পাশাপাশি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলের অনলাইন ভার্ষনের সাংবাদিকদের মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় সুমনকে যুবদলের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে এ যাবৎ কাল পর্যন্ত আমরা নরসিংদী জেলার সকল ছাত্র নেতারা এবিষয়ে এর পুন:তদন্তের আবেদন জানাই। একই সাথে দলের নিবেদিত প্রান, ত্যাগী ও পরিক্ষিত নেতা মাহমুদ হোসেন চৌধুরী সুমনকে দলে ফিরিয়ে আনার জোর দাবী জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে গোলাম কবির কামাল আরো বলেন, নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার আওয়ামী লীগের দোসর আবু তাহের মোহাম্মদ মুসা দীর্ঘ দিন চাকুরীরত অবস্থায় থেকে বিগত/ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক এমপির ভাতিজাদের সাথে আতাত করে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে একটি অপরাধ জগতের সিন্ডিকেট তৈরী করেছেন। তার নেতৃত্বে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারীর একটি বিশেষ চক্র সক্রিয় রয়েছে। স্থানীয় কিছু অপরাধ চক্রের মাধ্যেমে রেলওয়ে স্টেশনের রক্ষিত সরকারি মালামাল অবৈধ ভাবে আত্মসাৎ সহ প্রতিনিয়ত যাত্রীদের টাকা ছিনতাই, মোবাইল ছিনতাই, মাদকের আখড়া, জুয়ার আসর ও রেলওয়ের জায়গায় অবৈধভাবে মার্কেট নিমার্ণসহ তার অধীনস্থ কর্মচারীদের লাঞ্চিত করার মত ঘটনাও সংগঠিত হয়েছে। এমনকি ছাত্র হত্যাকারী ভোট চোর এমপি হিরুর ভাতিজা যুবলীগ নেতা সিহাব এবং ছাত্রলীগ নেতা আলিফ গংদের উপস্থিতিতে শেখ মজিবুর রহমানে ১০৩ তম জন্মদিন জাকজমকপূর্ণ ভাবে পালন করেন এই স্টেশন মাষ্টার মুসা। বিগত ১৫ বছর ধরে ছাত্র হত্যাকারী ভোট চোর এমপি হিরুর আস্থাভাজন হিসাবে হাজারো অপকর্মের পরও নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বর্তমানে স্টেশন মাষ্টার মুসা তার বোল পাল্টে নিজেকে জিয়ার সৈনিক হিসাবে পরিচয় দেওয়া শুরু করেছে। যা বিএনপি'র ভাবমুর্তির জন্য চরম হুমকি।
এসব অপকর্মের হোতা আওয়ামীলীগের দোসর মুসা ও শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারকে অনতিবিলম্বে চাকুরিচুত করাসহ আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবী জানাচ্ছি। অন্যথায় সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে স্টেশন মাষ্টারের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে বলে সোমবার সম্মেলনে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও৷ সাবেক ছাত্রদল নেতা এড. বাসেদ, শহর বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফারুক উদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আমিনুল হক বাচ্চু, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক ও নরসিংদী সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি শফিকুল ইসলাম আপেল, কৃষকদলের সদস্য সচিব ও সাবেক জিএস দীপক বর্মন প্রিন্স, জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ভিপি নাসির, করিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মনিরুল ইসলাম মনির প্রমুখ।
.jpeg.webp "বাউল মেলা। ছবি সংগৃহীত")