স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশের উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এতিমদের টাকা মেরে খায়। নৌকায় ভোট দিলে দেশে উন্নয়ন হয় আর বিএনপির কাজ হচ্ছে মানুষকে পুড়িয়ে মারা। এ দেশের মানুষ যখনই নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এনেছেন তখনই ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ১৫ বছর আগে এদেশের কি অবস্থা ছিল, আর এখন কি অবস্থায় আছে।
রোববার (১২ নভেম্বর) নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজিত মুসলেউদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনগনের উদ্দ্যেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কোনো মানুষের মধ্যে যদি মনুষ্যত্ববোধ থাকে তাহলে জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে পারে না। বিভিন্ন জায়গায় জীবন্ত মানুষকে ওই বিএনপি-জামায়াত পুড়িয়ে হত্যা করছে। পুড়িয়ে দিচ্ছে যাত্রীবাহী বাস ও এম্বুলেন্স। মানুষকে পুড়িয়ে মারা, সম্পদ পুড়িয়ে নষ্ট করা- এটাই তাদের কাজ। ইসরাইলিরা যেমন মানুষের বাড়ীতে, হাসপাতালে বোমা নিক্ষেপ করে বিএনপি-জামায়াতও তাদের দোষর হয়ে তাই করছে। আমরা উন্নয়ন করি, আমরা সৃষ্টি করি, ওরা ভাঙে, ওরা নস্যাৎ করে। ওরা ধ্বংস করতে জানে জনগণের কল্যাণ করতে জানে না। কাজেই ওদের কাছ থেকে জনগণকে সাবধান থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল বলেই এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এরপর যারা এসেছিল তারা দেশের মানুষের উন্নতি চাইনি। আবার নৌকা মার্কা ক্ষমতা এসেছে দেশের উন্নয়ন হয়েছে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা নত করে চলতে হয় না, আমরা মাথা উঁচু করে চলতে পারছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরবর্তী সময়ে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা এ দেশের উন্নয়নের চিন্তা না করে নিজেদের ব্যবসায়িক চিন্তা করছে মাত্র। দেশের মানুষের কথা ভেবে সেদিন আমার ছোট দুটি ছেলে-মেয়েকে রেখে দেশে ফিরে এসেছিলাম করব। তাইতো দেশের উন্নয়নের কথা ভেবে নৌকায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনে। দেশের মানুষের কথা ভেবে দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছি আমরা ১৫ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি। যাতে মানুষ আরও ভালোভাবে চলতে পারে, থাকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই বাংলাদেশ আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। এই স্বাধীনতার সুফল বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাব।
বাংলাদেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা করে উন্নত জীবন নিশ্চিত করবো। বাংলাদেশকে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশে রেখে গিয়েছিলেন। তার আদর্শ বুকে নিয়ে ও পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়শীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করেছি। সেটা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা বাস্তবায়ন করতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকেই জয়ী করতে হবে।
আওয়ামী দলীয় প্রধান নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী নির্বাচনে আপনারা যে যত পারেন প্রার্থী হন, আমি যাকে নৌকা মার্কা দেব, ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার জন্য কাজ করতে হবে।
পরিশেষে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কাকে পুণরায় নির্বাচিত করে জনগণের সেবা করার সুযোগ চান প্রধানমন্ত্রী।
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমপি, শিল্পমন্ত্রী অ্যাড. নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি. প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগ নেতা, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, নরসিংদী-১ থেকে নির্বাচিত লে. কর্নেল (অব.) মো. নজরুল ইসলাম হিরু (বীরপ্রতীক) এমপি, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, গাজীপুরের কালীগঞ্জ আসনের সাংসদ মেহেরা আফরোজ চুমকি এমপি, নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের সাংসদ জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের (নরসিংদী গাজীপুর জেলার দায়িত্ব) সাংসদ তামান্না নুসরাত বুবলি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এড. রিয়াজুল কবির কাউসার ও নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লাসহ অন্যান্যরা।
বিকেল ৩টা ২৫ নরসিংদীর মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি ৪৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলার ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।