স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীতে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানের পক্ষে বিএনপির কয়েকজন নেতা তদবির করতে এসে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষে ভাঙ্চুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটায় করিমপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন নেতৃবৃন্দ। তবে এঘটনায় কোন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, দেশের পট পরিবর্তনের পর আত্মগোপনে চলে যায় করিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মমিনুর রহমান আপেল। সম্প্রতি অনুস্থিত থাকা চেয়ারম্যানদের পদ বাতিল করে উক্ত পদে প্রসাশনের লোকদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাই চেয়ারম্যান আপেলের নিকট আত্মীয় হওয়া সত্বে তাকে যেন চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে না দেওয়া হয় সেজন্য করিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মো. আসাদুজ্জামান কাজল।সোমবার কাজল নেতৃত্বে দলীয় কয়েকজন নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাথে দেখা করে তদবির করতে সদর উপজেলা পরিষদে আসেন।
এ সময় ইউএনও অন্য একটি মিটিংয়ে থাকায় তাদের ওয়েটিং রুমে বসতে বলেন। এদিকে চেয়ারম্যানের কক্ষের দরজা খোলা অবস্থায় দেখতে পেয়ে আসাদুজ্জামান কাজলের নেতৃত্বে কয়েকজন ওই কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা কক্ষে ঢুকেই সদ্য অপসারণকৃত আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ক্রেস্ট ও নামফলক দেখতে পান।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসাদুজ্জামান কাজলসহ তার সাথে থাকা জেলা তাঁতী দলে সাধারণ সম্পাদক ও জেলা নবীন দলে সভাপতি আমির হোসেনসহ অন্যান্যরা ভাঙ্চুর চালায়। এ জেলা নবীন দলে সভাপতি আমির হোসেন সময় লকার ভেঙে নাইট গার্ড মাজেদুলের ব্যাগ ও নগদ টাকা মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা সুলতানা নাসরীন তাদেরকে ডেকে আপোষ মিমাংসা করে দেন। তবে ইউএনও এর ডাকে অন্যান্যরা সারা দিলে ঘটনার মূল কারিগর সেই আসাদুজ্জামান কাজল উপস্থিত হননি।
ইউএনও এর ডাকে বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপজেলা পরিষদে এসে লুট করে নিয়ে যাওয়া মোবাইল নগদ অর্থ ফিরিয়ে দেন পাশাপাশি এঘটনার জন্য ক্ষমা চান। পরে এ ঘটনার জন্য ২০ হাজার টাকা ক্ষতি পূরণ দেন ওই বিএনপি নেতারা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত করিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মো. আসাদুজ্জামান কাজল বলেন, ভাঙ্চুরের সময আমি অন্যরুমে ছিলাম। আর ব্যাগ লুটের বিষয়টি আমাকে পরে দেখানো হয়েছে। আর আজকের বিষয়টা জালাল চেয়ারম্যান ঢিল করেছে।
নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা সুলতানা নাসরীন বলেন, বিষয়টি ইতোমধ্যে আপোষ হয়ে গেছে। আমার নাইট গার্ডের ব্যাগ যে ছেলে সে সেগুলো ফিরিয়ে দিয়েছে এবং এর জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণও আদায় করা হয়েছে।
তাছাড়া উপজেলা পরিষদের তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। শুধুমাত্র কয়েকটি ক্রেস্ট ভাংচুর করেছে তারা। তবে এঘটনায় কেন কোন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের উত্তরে ইউএনও বলেন, যার জিনিস খোয়া গিয়েছিল সে সেগুলো ফেরতসহ জরিমান পাওয়ায় আইনি কোন ব্যবস্থা নিতে রাজি হয়নি।