হলধর দাস: নরসিংদী শহরের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জমিদার ললিত মোহন রায় প্রতিষ্ঠিত সাটিরপাড়া কালীকুমার ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজ । এমপিও ভূক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রকগণ সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক শ্রেণির ঘুষখোর কর্মচারী-কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় সরকারের নিয়মনীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে পবিত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে যেন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে বলে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসী-সুধীজন। এলাকাবাসী বলেন, ব্যাপক অনিয়মের কারণে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তার শিক্ষার মান নিয়ে অতীতের মতো গর্ব করার অবস্থান আর ধরে রাখতে পারছে না।
অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্চাচারীতার কারণে
কোটা আন্দোলনে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলেও ঐতিহ্যবাহী সাটিরপাড়া কালী কুমার ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজ নামের এই প্রতিষ্ঠানটিতে চলমান অনিয়ম, দুর্নীতি আর ত্রাসের রাজত্বের পতন হয়নি।
সদ্য অতীতে অনিয়মের মাধ্যমে লুটেপুটে খাওয়া এক জগদ্দল পাথরকে অপসারণ করলেও তার প্রেতাত্মারা যেন পুনরায় লুটেপুটে খাওয়ার পাঁয়তারা করছে। এখানে গভর্নিং গঠনে কোন নিয়ম মানতে চান না তারা।
জানা যায়, গত ১৩ জুন/২০২৪ তারিখে প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান মোঃ আবু তালেব। যোগদান করেই তিনি অনিয়ম আর দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং কমিটি গঠন করার জন্য ৩০/৬/২০২৪ তারিখ নির্বাচনী তফসিল ঘোঘণা করেন । তফসিল মোতাবেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডি গঠনের জন্য নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৬/৭/২০২৪ । কিন্তু নির্বাচন হয়নি।
হবে কি করে?
অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনের জন্য কাউকে মনোনয়ন পত্র কিনতে দেয়া হয়নি। বলা হয় যে, এখানে আমরা আওয়ামীলীগের লোক। কোন নিয়মের দরকার নেই। বার বার আমরাই থাকবো গভর্নিং বডিতে থাকবো । আমরা যাদের নাম শিক্ষা বোর্ডে পাঠাবো তারাই গভর্নিং বডির সদস্য, সভাপতি, নির্বাচিত হবেন। এরপরও যদি কেউ ফরম নিতে আসিলে তার রক্ত ঝরবে। তবুও নির্বাচনের ফরম কাউকে তুলতে দেয়া হবে না। শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের ফরমও অধ্যক্ষ মহোদয় তার পছন্দের ব্যক্তি ছাড়া শিক্ষকদের সকলের পছন্দের শিক্ষককে নিতে দেননি। এভাবে নির্বাচন না দিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কুচক্রিরা অধ্যক্ষ মোঃ আবু তালেব এর সাথে যোগসাজসে গভর্নিং বডির সদস্যদের নাম জুলাই মাসের শেষ দিকে বোর্ডে অনুমোদনের জন্য প্রেরন করেন।
২০২৪ সালের ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত প্রবিধানমালার বিধান মোতাবেক কোনো ব্যক্তি একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে পরপর ২ ( দুই ) বারের অধিক ক্ষেত্রমত সভাপতি, শিক্ষক প্রতিনিধি বা অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচিত হইতে পারিবেন না। কিন্তু জারিকৃত এই বিধি অমান্য করে নিয়ম মাফিক নির্বাচন ছাড়াই অবৈধভাবে গভর্নিং বডির পকেট কমিটিতে যে ব্যাক্তিদের নাম পাঠানো হয় তাদের মধ্যে ২(দুই) ব্যক্তি যথাক্রমে শাখাওয়াত হোসেন মোল্লা ও ফারজানা নজরুল এর আগে একাধারে ৪(চার) বার গভর্নিং বডিতে সদস্য ও সভাপতি ছিলেন ।
এছাড়াও পাওয়ারলুম ব্যবসায়ী মমিনুর রহমান আপেল যার গভর্নিং বডির সদস্য হওয়ার কোন যোগ্যতা নাই তিনিও এর আগে লাগা পরপর ৩
(তিন) বার গভর্নিং বডির সদস্য হয়েছিলেন টাকার বদৌলতে । কেউ প্রতিবাদ করতে পারতো না।
এনিয়ে এলাকার সুধীজন এবং অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে ।
এব্যাপারে এলাকার পৌর কাউন্সিলর মোজাম্মেল হক এবং জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোঃ ওমর ফারুক সহ ১০ জন অভিভাবক গন্যমান্য ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মোঃ তালেব হোসেন এর সাথে দেখা করে বিধি বহির্ভূতভাবে গোপনে গভর্নিং বডি গঠনের প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবী জানান এবং বলেন, অনতিবিলম্বে সকলের অংশগ্রহণে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করার জন্য অনুরোধ করেন। প্রিন্সিপাল মহোদয় তাদেরকে বলেন, আমি মাসেক আগে জয়েন করেছি এই প্রতিষ্ঠান। আমি আসার আগেই নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এ প্রতিনিধি'র সাথেও অধ্যক্ষ মোঃ তালেব হোসেন একই কথা বলেন,। অথচ স্কুল এন্ড কলেজের অবৈধ গভর্নিং বডি বাস্তবায়ন করতে অধ্যক্ষ নিজেই উঠে পড়ে লেগে রয়েছেন।