স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর শিবপুরে সোনার চেইন ও কানের দুলের জন্য ২য় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে প্রতিবেশি এক নারী। হত্যার পর শিশুর মরদেহটি বস্তাবন্দি করে ঘরের আলমিরার ভেতরে রেখে দেয়। ঘটনাটি ঘটে শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের আখড়া মন্দিরের পাশে আজিম উদ্দিনের বাড়িতে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আজিম উদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া হানিফ মিয়ার ঘরের আলমারি থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সায়মা ওইদিন দুপুর দেড়টার দিকে বাড়ির পাশ থেকে নিখোঁজ হয়। সায়মা উপজেলার যোশর গ্রামের সারোয়ার জাহানের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি প্রাইমারী স্কুলের ২য় শ্রেণির ছাত্রী। এঘটনায় অভিযুক্ত নারী সেলিনা আক্তার শেলী ও তার রিক্সা চালক স্বামী হানিফাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শিশু সায়মা জাহান মঙ্গলবার স্কুল থেকে ফিরে দুপুরে খাবার খেয়ে দেড়টার দিকে খেলতে বের হয় সায়মা। এরপর থেকে সে নিখোঁজ থাকে। পরে দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাড়ী ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
এ সময় কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে খেলতে যাওয়া পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া হানিফ মিয়ার শিশুকন্যা রাইসাকে জিজ্ঞেস করলে সায়মা তাদের ঘরেই আছে বলে জানায় সে। পরে হানিফের ঘরে তল্লাশি চালিয়ে আলমারির ভিতর বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশু সায়মার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় ভাড়াটিয়া হানিফ ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার শেলীকে আটক করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে শিবপুর থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত সায়মার বাবা সারোয়ার হোসেন বলেন, 'স্কুল থেকে ফিরে আমার মেয়ে খেলতে বের হয়। তখন তার গলায় একটি চেইন ও কানের দুল ছিল। প্রতিবেশী সেলিনা আমার মেয়ের কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। ওই সময় আমার মেয়ে তা আমাদেরকে বলে দিবে বললে সেলিনা আমার মেয়েকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে লাশ ঘুম করার উদ্দেশ্যে বস্তাবন্দি করে আলমিরার ভেতরে রেখে দেয়। এ ঘটনা সেলিনার শিশু মেয়ে রাইসা আমাদেরকে জানায় ।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে এ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।পরে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত হানিফ ও তার স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে নিহত শিশুর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কী কারণে এ ঘটানো হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।