স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর মাধবদীতে পূর্বশত্রুতার জের ধরে আব্দুস ছালাম (৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সকালে মাধবদী থানার পাইকারচর ইউনিয়নে উত্তর চর ভাসানিয়া গ্রামে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুস ছালাম চরভাসানিয়া গ্রামের মৃত আদম আলীর ছেলে এবং গোপালদী বাজারের বিশিষ্ট পাইকারি কাপড় বিক্রেতা ছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে সরেজমিনে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পুরো বাড়ি জুড়ে চলছে শোকের মাতম। নিহতের স্ত্রী,ছেলে ও মেয়েরা পিতৃ হত্যার বিচার চেয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন।
নিহতের মেয়ে রুমানা আক্তার, ছেলে আবুল কালাম, ছেলে বউ তানিয়া আক্তার ও এলাকাবাসী জানায়, গত দুই সপ্তাহ পূর্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন মেম্বারের ছেলে মোবারক এর নেতৃত্বে গোপালদী বাজার থেকে ১৫ হাজার গজ কাপড় চুরি হয় । পরবর্তীতে বাজার কমিটি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ হাজী আব্দুস সালামকে সাক্ষী করে মোবারক গংদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা হাজী আব্দুস সালামকে বিভিন্ন ভয়ভীতিসহ প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল।
এঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার সকাল ৯ টার দিকে হাজী আব্দুস সালাম কাপড় কেনার জন্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা নিয়ে অটোরিকশাযোগে তার ব্যবসা স্থল গোপালদী বাজার যাচ্ছিলেন। পথে অটোরিক্সাটি চরভাসানিয়া ঈদগা সংলগ্ন রাস্তায় পৌঁছলে হারুন মেম্বার ও তার ছেলে মোবারক এর নেতৃত্বে ফরহাদ, আক্তার, আনোয়ার মেম্বার, আলী, জুনায়েদ, হৃদয় ও রবিউল মিলে সিএনজির গতিপথ রোধ করে।
এসময় তারা হাজী আব্দুস সালামকে টেনে হিচড়ে অটো থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তার পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে ফেলে, ঘাড় মটকে ফেলে এবং বোতল দিয়ে পিটিয়ে পিঠের শিরদাঁড়া ভেঙ্গে মুমূর্ষ অবস্থায় ফেলে চলে যায়। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাধবদী প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে পরে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের লাশ বর্তমানে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
এঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িঘরের সকল আসবাবপত্র ভাঙচুর ও ছড়ানো ছিঁটানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে তবে বাড়ির কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হারুন মেম্বারের মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি এ ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন।
এঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরবর্তী যে কোন দুর্ঘটনা এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, 'আমাদের কাছে তথ্য আছে তার মাথায় পানি ঢালা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। সুতরাং এটা হত্যাকাণ্ড নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু তা এখনো নিশ্চিত নয়।' ময়না তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না বলে ও জানান তিনি।