নাসিম আজাদ: নরসিংদীর পলাশ শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী জেলাশহর ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করলেও বন্ধ রয়েছে বাস সার্ভিস। উপজেলার প্রাণকেন্দ্র ও ঘোড়াশাল পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে নাম মাত্র ২টি বাসস্ট্যান্ড থাকলেও প্রায় ১৮ বছর ধরে বাস সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে উপজেলার হাজারো যাত্রী। বাস সার্ভিস না থাকায় এখানকার সিএনজি চালকদের বিরুদ্ধেও বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের।
পলাশ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ দুটি বাসস্ট্যান্ডকে ঘিরে রয়েছে দেশের বৃহৎ ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ২টি সারকারখানা, প্রান আরএফএল কোম্পানী, উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়, পুলিশ স্টেশন, স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ অসংখ্য ছোট বড় কারখানা। এরপরেও বছরের পর বছর ধরে বাস সার্ভিস বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। এ যেন দেখার কেউ নেই!
অলিউল্লাহ আহমাদ নামে এক যাত্রী জানান, পলাশের শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন নরসিংদীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন। এছাড়াও অন্যান্য পেশার যাত্রীরাও দেশের বিভিন্ন গন্তব্যস্থানে যাতায়াত করেন। কিন্তু পলাশ বাসস্ট্যান্ডে সিএনজি ও অটোরিকশা ছাড়া কোন লেগুনা, আরটিবি নামক বাস অথবা মিনি বাস সার্ভিস না থাকায় এখানে চলছে ভাড়ার নৈরাজ্য।
এই স্থান থেকে জেলখানার মোড়ে সিএনজি যোগে আসা যাওয়ার ভাড়া ৮০ টাকা। দেশের কোথাও এত স্বল্প দূরত্বের জন্য এতো ভাড়া নেই। পাঁচদোনা থেকে লোকাল বাসে ৪০ টাকা দিয়ে ঢাকা যাওয়া যায়। তাই পলাশ বাসস্ট্যান্ড থেকে নরসিংদী জেলা শহরে যাতায়াতের জন্য সিএনজির পাশাপাশি লেগুনা, আরটিবি নামক বাস সার্ভিস চালু এবং
ঢাকা আসা যাওয়ার জন্য বাস চালুর জোড় দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, জনতা অথবা পিডিবি থেকে নরসিংদীতে আসা যাওয়া করলে ১২০ টাকা সিএনজি ভাড়া দিতে হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এতো বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে তাদের অভিভাবকরা ওই ভাড়া দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সম্প্রতি সিএনজিতে স্টিকার লাগিয়ে মালিক শ্রমিক দের যৌথ সিদ্ধান্তে ৩০ টাকার ভাড়া ৪০টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, মালিক ও শ্রমিকরা কোন আইনের বলে নিজেরা ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে সিএনজি চালকরা জানান, সব কিছুরই দাম বেড়েছে। মালিকপক্ষকেও প্রতিদিনের জমার টাকাও বেশি দিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে আমাদের খরচও বেড়েছে। তাই ভাড়া বাড়ানো ছাড়া আমাদের আর কোন উপায়ও নেই।
অন্যান্য যাত্রীরা জানান, এই উপজেলা রাজধানীর পাশের জেলায় হওয়াতে সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের চাকুরীজীবিরা ঢাকায় আসা-যাওয়া করে অফিস করেন। সেই সাথে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশার লোকজনও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করেন।
এতো গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হওয়া সত্বেও ঢাকা যেতে হলে একাধিক যানবাহন বদল করে যেতে হয়। বাস সার্ভিস বন্ধ থাকায় জীবন মানের উপরও বিরূপ প্রভাব পড়েছে।যাতায়াত সমস্যা এবং ভাড়া নৈরাজ্য ঠেকাতে পুনরায় বাস সার্ভিস চালু ও জেলা শহরে যাতায়াতের জন্য লেগুনা, আরটিবি নামক সার্ভিস চালু করার দাবিও জানান তারা।