স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীতে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার সঙ্গে থাকা ভাগ্নে অনিক গুরুতর আহত হয়েছেন।গুরুতর আহতাবস্থায় অনিককে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর রায়পুরা থানার ভিটি মরজালের শিমুলতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ব্যবসায়ীর নাম মোমেন মিয়া (৩৫)। তিনি শিবপুর থানার যোশর উত্তরপাড়া এলাকার আসাদ মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন ডিম ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা ভাগ্নে অনিক (২২) গুরুতর আহত হয়েছে। অনিক বেলাব উপজেলার হোসেন নগর গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে। তাকে প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ডিম ব্যবসায়ী মোমেন মিয়া পাশ্ববর্তী বেলাব উপজেলার হোসেন নগর গ্রামে তার বোনের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে শিবপুরের যোশর এলাকায় বাড়ি ফিরছিলেন ভাগ্নে অনিককে নিয়ে। এসময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভিটি মরজালের শিমুলতলী এলাকায় পৌঁছালে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত একদল দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেল যোগে আসা মোমেনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।পরে তাদের আত্মচিৎকারে লোকজন আসতে থাকলে দুজনকে এলোপাতারি কুপিয়ে ফেলে রেখে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা।
এতে ঘটনাস্থলেই ব্যবসায়ী মোমেন মিয়ার মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা গুরুতর আহতাবস্থায় অনিককে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের সদস্যরা মরদেহ শনাক্ত করেন।
নিহত মোমেন মিয়ার ছোট ভাই বাবু মিয়া জানান, যোশর উত্তরপাড়া এলাকার সবদর আলীর ছেলে সালাম (৩৪) ও হানিফার ছেলে শামীম (৩০) তার ভাই ডিম ব্যবসায়ী মোমেন মিয়ার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেয়ার কারণেই তারা আমার ভাই মোমেনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং আমার ভাগিনাকেও কুপিয়ে আহত করেছে। এর আগেও তারা আমার ভাইয়ের উপর হামলা করেছে। আজ একেবারে তার জানে মেরে ফেলেছে আমার ভাইকে। সেই সাথে তার ভাইয়ের হত্যাকরীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান নাদিম সরকার বলেন, স্থানীয়ভাবে দীর্ঘদিনের একটি বিরোধ ছিল তাদের মধ্যে। আমরা স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসা করেছি। এখন কি থেকে কি হয়েছে তা তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। তবে তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে আমরা এদের কঠিন বিচার চাই।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যার ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। কে বা কারা কী কারণে হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে তদন্তের পর বলা যাবে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগের অনুযায়ী আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। খুব দ্রুত আসামীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।