স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর মাধবদীতে চাঁদা না দেওয়ায় এক পাওয়ারলুম কারখানা মালিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। হত্যার পর গুমের উদ্যেশ্যে মরদেহ ফেলতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয় অভিযুক্তরা। পরে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের কৌলাতপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
নিহত নুর মোহাম্মদ (৪৮) সদর উপজেলার মাধবদী কাঠালিয়া ইউনিয়নের কোলাতপুর গ্রামের আলকাস মিয়ার ছেলে। সে নূর মোহাম্মদ পাওয়ারলুম ও ট্রেক্সটাইল কারখানার মালিক ছিলেন।
অটককৃতরা হলো- নরসিংদীর মাধবদী কাঠালিয়া গ্রামের রববানির ছেলে রবিন (২১) একই গ্রামের এবাদুলাল্লাহর ছেলে রুবেল (২২)। কাঠালিয়া ইউনিয়নের কোলাতপুর গ্রামের অব্দুল আজিজ ছেলে আলামিন (৪২) আব্দুল রশিদ এর ছেলে রকিব হোসেন (২১) ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, সদর উপজেলার মাধবদী কাঠালিয়া ইউনিয়নের কোলাতপুর গ্রামের আলকাস মিয়ার ছেলে নূর মোহাম্মদ নিজের নামে নূর মোহাম্মদ পাওয়ারলুম ও ট্রেক্সটাইল কারখানা পরিচালনা করে আসছিল। সম্প্রতি এলাকার রবিন (১৯) , রকিব ,আলামিন ও রুবেলসহ বেশ কয়েকজন নুর মোহাম্মদের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছেন। তবে তিনি চাঁদা দিতে অপারগতা জানায়। সর্বশেষ উক্ত চাঁদাবাজরা ৫ লক্ষ টাকা দাবী করেন। কিন্তু এতেও কারখানা মালিক নূর মোহাম্মদ অস্বীকৃতি জানায়।
এ নিয়ে তাদের সাথে কারখানা মালিকের দন্ধের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে নূর মোহাম্মদকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। পরে তাকে পাশের একটি বন্ধ কারখানায় নিয়ে যায় ওই চাঁদাবাজ দল। সেখানে তাদের সাথে বাক বিতন্ডা হয়। বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে চাঁদা দাবী করা রুবেল, রকিব , রবিন ও আলামিন ও অজ্ঞাত নামা আরও ১ জনসহ ৫ জন নূর মোহাম্মদকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ গুমের উদ্যেশে ভোর রাতে বস্তাবন্দি করে নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার সীমান্তে ফেলে দিতে যায়।
এসময় স্থানীয় লোকজন তা দেখে তাদের আটক করে এবং গনধোলাই দেয়। পরে স্থানীয়রা মাধবদী থানায় খবর দেয়। বেলা ১২টার দিকে থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরন করে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে জনতার হাতে আটক ৪ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়।
কাঠালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইসাক মিয়া বলেন, পুলিশ যাদেরকে আটক করেছে,তারা এলাকার চিহ্নিত ডাকাত ও মাদক ব্যাবসায়ী। স্থানীয়দের হাতে আটকের পর চাঁদার কারনে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পাওয়ালুম মালিক নুর মোহাম্মদকে হত্যার অভিযোগে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে। এর মধ্যে এক জন ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবীর কথা জানিয়েছে। বাকিরা অন্য কথা বলছে। সবগুলো বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।