• নরসিংদী
  • রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

প্রকৃত ইতিহাস শিশু-কিশোরদের সামনে তুলে ধরতে হবে : প্রধানমন্ত্রী


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১২:০১ এএম
প্রকৃত ইতিহাস শিশু-কিশোরদের সামনে তুলে ধরতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাগো নরসিংদী ডেস্ক 
 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশু-কিশোরদের সামনে দেশের বিজয় ও অর্জনের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। তিনি  বলেছেন, এতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত হবে।

তিনি বলেন, ‘প্রকৃত ইতিহাস জানলে শিশু-কিশোররা যেমন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, স্বার্থপরের মত নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত না থেকে দেশের জন্য দেশের মানুষের কল্যাণে কিছু করার একটা আগ্রহের সৃষ্টি হবে, একটা চেতনা আসবে। যেটা আমাদের জন্য খুবই দরকার। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতে করে তাদের মেধা, জ্ঞান, শৈল্পিক মন ও মনন বিকশিত হবে। তারা কে কোন ব্রান্ড পরবে বা ধন সম্পত্তির পেছনে কেবল ছুটে বেড়াবে না।

প্রধানমন্ত্রী আজ দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের নলিনী কান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের ওপর ভিত্তি করে আঁকা একটি স্ক্রল পেইন্টিং এর পক্ষকাল ব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা অনেক দিবস পালন করলেও সেই দিবসের মাহাত্মটা কি, ইতিহাসটা কি অনেক সময় দেখা যায় আমাদের নতুন প্রজন্ম জানতে পারে না। কাজেই, দেশের সঠিক ইতিহাস প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে আরো নজর দেয়া দরকার।

এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ’৭৫ এর পর ২১ বছর তরুণ প্রজন্মকে দেশের সঠিক ইতিহাস জানতে দেয়া হয়নি বরং ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। ফলে, অনেকেই আশপাশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয় পরিজন থেকে পরিপূর্ণ বা সঠিক ইতিহাস জানতে পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান ২১ শে ফেব্রুয়ারি বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কেন আমরা উদযাপন করি, জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের নির্মম নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড বা ’৭১ এ যেভাবে এদেশে গণহত্যা হয়েছে বা আমাদের সংগ্রাম-সে সময়ে যে সাহস নিয়ে আমাদের নিরস্ত্র বাঙালি অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে, সেই বিজয়ের সঠিক ইতিহাস-এরকম বহু ঘটনা আমাদের জীবনে রয়েছে, যার সমন্ধে আমাদের শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রজন্মের পর প্রজন্মের জানা উচিত।

তিনি বলেন, প্রকৃতি আমাদের এত সুন্দর একটা দেশ দিয়েছে সেখানে প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের সকলের মাঝে এই শৈল্পিক চেতনাটা রয়েছে এবং যার বিকাশটা দরকার ।

এ সময় দেশের শিল্প সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা তাঁর সরকার যেমন অব্যাহত রেখেছে তেমনি জাতির পিতার কন্যা হিসেবে তিনিও করে যাবেন বলেও উল্লেখ করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনের মহাপট’ শীর্ষক বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এই স্ক্রল পেইন্টিংয়ের প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তনের সংগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

বঙ্গবন্ধুর বৈচিত্রময় ও বহুমাত্রিক জীবন তুলে ধরে এ স্ক্রল পেইন্টিং এঁকেছেন দেশের খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ। ১৫০ ফুট দীর্ঘ স্ক্রল পেইন্টিংটি বাংলাদেশে সম্পাদিত সর্ববৃহৎ পটভূমিতে জাতির পিতার জীবনভিত্তিক চিত্রকর্ম। চিত্রশিল্পীর ভাষায় মাটি থেকে তৈরী বার্নট অ্যাম্বার রং এর মাধ্যমে মাটি থেকে উঠে আসা ইতিহাসের এই মহানায়ককে চিত্রিত করেছেন তিনি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। স্ক্রল পেইন্টিংটির শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রদর্শনীর আয়োজন সহযোগী বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘মাত্রা’র পক্ষ থেকে ম্যানেজিং পার্টনার শিল্পী আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদের সভাপতি শিল্পী জামাল আহমেদও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুজিববর্ষের থিমসঙ এবং স্ক্রল পেইন্টিংয়ের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি পরিবেশিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে শিল্পীর তুলির আঁচড়ে আমাদের বাংলাদেশের সংগ্রাম থেকে অর্জনের যে ইতিহাস তা ফুটে উঠেছে। শুধু বর্ণমালা পড়েই নয় শিল্পির তুলিতেও মানুষ সেটা দেখতে এবং উপলদ্ধি করতে পারবে, জানতে ও শিখতে পারবে।

তিনি বলেন, আমাদের কবি, শিল্পি, সাহিত্যিক যে যেখানে আছেন তারা যে যে কাজ করে যাচ্ছেন আপনারা তা করে যাবেন। অন্তত আমি এটুকু বলতে পারি যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, জাতির পিতা কন্যা হিসেবে  দেশের মানুষের কল্যাণে যা যা কাজ করার সেটা যেমন করে যাব, আবার, বাঙালি হিসেবে আমাদের যে শিল্প, সাহিত্য বা সংস্কৃতির চর্চা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য যতটুকু সহযোগিতার দরকার, অবশ্যই আমি তা করবো। হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী থাকলে সহোযোগিতার সুবিধাটা বেশি তবে, সবসময় আমার কাছ থেকে এই সহযোগিতা তাঁরা পাবেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের কবি, শিল্পি, সহিত্যিকরা তাদের লেখনীর মধ্যদিয়ে তাঁদের তুলির আঁচড়ে, কবিতার মাধ্যমে, গানের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামটিকে চিরভাস্বর করে রেখেছেন। সেজন্য ষড়যন্ত্রকারীরা চাইলেও এই নামটি মুছতে পারেনি। 

এজন্য সকলকে তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
ইতিহাসকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা হিসেবে তাঁর সরকারের দায়িত্বে আসার আগে ২১টি বছর কোথাও জাতির পিতার ছবি থাকলে তা একমাত্র সরকারি সম্প্রচার মাধ্যমে ছিলো। 

সূত্র : বাসস

জাতীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ