ডেস্ক রিপোর্ট : দেশে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর পছন্দের নাম দেওয়ার শেষ সময় ছিল আজ বিকাল ৫টা পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ মোট ২৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল সার্চ কমিটির কাছে নাম প্রস্তাব করেছে। তবে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইসি গঠনে কোনো নাম প্রস্তাব করেনি।
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে ৩৯টি। এসব দলগুলোকে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নাম দেওয়ার অনুরোধ করেছিল সার্চ কমিটি। সার্চ কমিটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে প্রায় ২৫০ টির মতো প্রস্তাব জমা পড়েছে। পূর্বনির্ধারিত সময়ের শেষ দিন শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপস্থিত হয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা নামের তালিকা জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া ই-মেইলের মাধ্যমে ২শর মতো প্রস্তাব এসেছে, এতে বিদেশে থাকা অনেক বাংলাদেশিও প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন থেকে ৬টি প্রস্তাব জমা পড়েছে। পেশাজীবী সংগঠনের মধ্যে বিএমএ, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটশন ও ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনও আছে বলে জানা গেছে।
সার্চ কমিটির সাচিবিক দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব শফিউল আজিম শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেছেন, আমাদের দায়িত্ব ছিল আজ বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রস্তাব গ্রহণ করা। আমরা বিকাল ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করে কাউন্টার বন্ধ করতে বলেছি।
তিনি বলেন, সার্চ কমিটির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করার চেষ্টা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সবার পক্ষ থেকেও আন্তরিক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে শফিউল আজিম বলেন, 'আপাতত আমরা বিশিষ্টজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠক নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। যেসব প্রস্তাব এসেছে সেগুলোতে কারা কতগুলো নাম দিয়েছেন- তা খুলে দেখা হয়নি। বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রস্তাবিত নাম যাছাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করবে সার্চ কমিটি।'
সিইসি কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে। এর আগেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে। ইসি গঠনে নতুন আইন অনুযায়ী, গঠিত সার্চ কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করতে হবে।
নতুন ইসি গঠনে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ের জন্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সার্চ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয়েছে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, হাইকোর্টের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান, বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন ও কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
পরের দিন (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটি প্রথম বৈঠক করে। ওই বৈঠকে ইসি গঠনের জন্য দেশের সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তাদের পছন্দের ১০ জনের নাম চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনের পাঁচটি পদে সুপারিশ করার জন্য ১০ জনের নাম প্রস্তাব করার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন সার্চ কমিটি।