• নরসিংদী
  • বুধবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  বুধবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
website logo

রায়পুরায় অস্ত্রসহ আসাবুদ্দিনের গ্রেফতার বিষয়ে ভিন্নমত


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৫৯ এএম
রায়পুরায় অস্ত্রসহ আসাবুদ্দিনের গ্রেফতার বিষয়ে ভিন্নমত
গ্রেফতারকৃত আসাবুদ্দি

স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায়  অস্ত্রসহ আসাবুদ্দিন (৫৫) নামে এক ব্যক্তি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার ঝড় তুলেছে, চলছে ভিন্নমত। গত রোববার (২৬ জুন ) উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের সোবানপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।বিভিন্ন মিডিয়াগুলোতে পুলিশের বরাত এমনটাই প্রকাশ করা হয়।

অপরদিকে আসাবুদ্দিনকে গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে অস্ত্র পাওয়া যায়নি বলে জানান এলাকাবাসী। কিন্তু বিভিন্ন পত্রিকায় অস্ত্রসহ তার গ্রেফতারে বিষয়টি প্রকাশ পেলে পুরো সোবহানপুর গ্রামজুড়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।

রায়পুরা থানার ওসি আজিজুর রহমান অস্ত্রটি গ্রেফতারে সময় নাকি পরে আসাবুদ্দিনকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গিয়ে উদ্ধার করা হয় বিষয়টি পরিস্কার না করে যথাযথভাবে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানান।

আসাবুদ্দিনের গ্রেফতার এবং অস্ত্র উদ্ধারে বিষয়ে ধোঁয়াশা থাকা রায়পুরা জুড়ে ধূম্রজালের সৃষ্টির প্রেক্ষিতে নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি কামরুল হাসান সোহেল’র নেতৃত্বে সংবাদকর্মীদের একটি দল সরেজমিনে সোবানপুর গ্রামে হাজির হয়ে গ্রাম ঘুরে বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বললে এলাকাবাসী বলেন, শ্বশুর বাড়ীর পাশে জমি ক্রয় করে গত কয়েক বছর ধরে আসাবুদ্দিন তার পরিবার পরিজন নিয়ে বাস করে আসছেন। তার বাড়ী পার্শ্ববর্তী শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামে। সাধাসিধে স্বভাবের আসাবুদ্দিন পেশায় একজন মাটি ব্যবসায়ী। এর পাশাপাশি সখের বশে বিয়ের ঘটকালীর কাজও করতেন।

এলকাবাসী জানায়, পত্র-পত্রিকায় আসাবুদ্দিনকে যেভাবে মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, অস্ত্র ব্যবসায়ী ও ডাকাত সদস্য বলে তুলে ধরা হয়েছে এর কোনটির তার কোন সম্পৃক্ততা কেউ কোনদিন দেখেনি বা লোকমুখে শোনা যায়নি।

গত রবিবার দুপুরের খাবার খেয়ে একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী পূর্ব পাড়া মহল্লায় বিয়ের ঘটকালীর কাজে ছেলে পক্ষকে সাথে নিয়ে মেয়ে দেখতে একটি বাড়ীতে যায়। সেবাড়ীতে থাকা অবস্থায় দুই পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত হয়ে কাউকে কিছু না বলে আসাবুদ্দিনকে ধরে পার্শ্ববর্তী পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে আসে।

আসাবুদ্দিনকে পুলিশ যার ঘর থেকে আটক করে নিয়ে যায় সেই প্রবাসীর স্ত্রী আমেনা বলেন, আমার মেয়েকে দেখতে ছেলে পক্ষকে সাথে নিয়ে আসাবুদ্দিন আমাদের বাড়ীতে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর দুইজন পুলিশ সদস্য এসে কাউকে কিছু না বলে আসাবুদ্দিনকে আটক করে নিয়ে যায়। তবে তার কাছ থেকে কোন পিস্তল কিংবা বন্দুক উদ্ধার হয়নি। শুধু তার সাথে একটি মোবাইল ফোন পায়।

আবদুল্লাহ নামে ১০/১২ বছরের প্রত্যক্ষদর্শী এক শিশু বলেন, ঘর থেকে আসাবুদ্দিনকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তাকে লাথি ও কিল-ঘুষি মারতে মারতে টেনেহিঁচড়ে পাশ্ববর্তী সোবানপুর পুলিশ কেন্দ্রে নিয়ে যায়।

মজিবুর রহমান নামে তার শ্বশুর বাড়ীর পাশের এক বয়োবৃদ্ধ বলেন, পাশে শ্রীনগর ইউনিয়ন থেকে আমাদের এই ইউনিয়নে তার শ্বশুর বাড়ীর পাশে এক টুকরো জমি ক্রয় করে কোনভাবে একটি দোচালা টিনের ঘর তুলে সেখানে বসবাস শুরু করে আসাবুদ্দীর পরিবার। সে মাটি ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। তবে শখের বশে বিয়ের ঘটকালী কাজও করতেন। তার নামে আমরা কোনদিন মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড , ডাকাতি কাজে ও অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত থাকার কথা শূনিনি বা দেখতেও পাইনি।

এসময় কান্না জড়িত কণ্ঠে আসাবুদ্দিনের স্ত্রী আমেনা বেগম বলেন, এই নুরুদ্দিনরা আমাদেরকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। তাদের যন্ত্রনায় আমরা শ্রীনগর গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হই। এথানে এসেছি তাও শান্তি দিচ্ছে না। ‘গত কয়েকদিন আগে আমার স্বামীকে বড়ি ব্যবসায়ী বানিয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করায়। এবার পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে নিয়েও খ্যান্ত থাকেনি সে। একজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে অস্ত্র ব্যবসায়ী সাজিয়ে তাকে অস্ত্রসহ কোর্টে চালান দেওয়ায় সে।

বাঁশগাড়ী ইউপি (১, ২ ও ৩) নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য রোকসানা বলেন, আমি আসাবুদ্দিনকে চিনতাম। তবে কোন দিন শুনিনি সে মাদক বা অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত আছেন।

এব্যাপারে কথা বলতে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে রায়পুরা থানায় গেলে ওসি , তদন্ত ওসি কিংবা এএসপি (সার্কেল) কাউকে থানায় পাওয়া যায়নি।

পরে মোবাইল ফোনে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এলাকাবাসী অনেক কথাই বলবে। তবে যথাযথভাবেই অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে এবং যথাযথ ভাবেই থানায় মামলা হয়েছে। যথাযথ ভাবে অস্ত্র উদ্ধারে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এর কোন উত্তর না দিয়ে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এব্যাপারে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান'র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, 'অস্ত্র উদ্ধার না করে তা দেখানোর কোন সুযোগ নেই। এমনটা ঘটে থাকলে বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।'

নরসিংদীর খবর বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ