• নরসিংদী
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৩ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  বৃহস্পতিবার, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ১৩ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
website logo

জীবনমরণ সন্ধিক্ষণে জুলাই আন্দোলনে আহত মাধবদীর আইনুদ্দিন 


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০:০১ পিএম
জীবনমরণ সন্ধিক্ষণে জুলাই আন্দোলনে আহত মাধবদীর আইনুদ্দিন 

মো. শাহাদাত হোসেন রাজু: জীবন মরণ সন্ধিক্ষণে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হওয়া রিকশাচালক আইনুদ্দিন। বর্তমানে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে আছেন। জুলাই আগস্টের গণ আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই নরসিংদীর মাধবদীতে পুলিশের গুলিতে আহত হয় আইনুদ্দিন।

আহত আইনুদ্দিন দিনাজপুর জেলার পীরেরহাট বটতলী এলাকার বিলাত আলীর ছেলে। সে মাধবদী বিরামপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া বাসায় থেকে রিক্সা চালিযে জীবিকা নির্বাহ করতো।

আহত আইনুদ্দিন ছোট ভাই জয়নুদ্দিন জানান, আহত আইনুদ্দিনের মাথায় কয়েকটি ছিটা গুলি লাগে। আহত হওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে সুস্থ হলে গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে চলে যায় সে। সেখানে তার নিজের নামে থাকা ৪ শতাংশ জমি ছিল সেটা বিক্রি করে স্থানী হাসপাতালে ভর্তি হন।  সেখানে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা নেই। হমি বিক্রির টাকায় ওষদের খরচসহ আনুসাঙ্গিকখরচ চালাতো। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও তার চোখের আলো দিন দিন কমে আসছিল। মাঝে মধ্যে মাথার যন্ত্রনাটাও প্রকোট আকার ধারণ করে। সেসময় পার্শ্ববর্তী বেডের রোগির সাথে থাকা একজন ঢাকা গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেয় আহত আইনুদ্দিনকে।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় ঢাকায় এসে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন। সেই থেকে অদ্যাবধি তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছে।  গত মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) তে নেওয়া হয়। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

আইনুদ্দিনের বড় ভাইয়ের শফিকুল ইসলাম বলেন আমরা পাঁচ ভাই বোন। মা মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন বাবা  ভিক্ষা করে যা পেতে তাই দিয়ে চলতো আমাদের সংসার।  টানাটানি সংসারে ১৪-১৫ বছর বয়সেই জীবন জীবিকার এ মুহূর্তে আমার যতটা মনে পড়ে ২০০০ সালের আগেই নরসিংদীতে চলে যায় আইনুদ্দিন।  সেখানে রিক্সা চালিয়ে বাবা মার জন্য টাকা পাঠাবেন। অল্প বয়সেই বোনের বিয়ের খরচের যোগান দেন আইনুদ্দিন। 

তিনি বলেন, সে যখন অসুস্থ হলো কেউ সাহায্য করতে পারিনি তাকে।নিজের জমি বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ জুগিয়েছে সে। বিগত আন্দোলনের আহতরা সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন সহযোগিতা পেলেও আমার ভাই আইনুদ্দিনের পাশে এসে দাঁড়ায়নি কেউ।

এসময় নরসিংদী কিংবা মাধবদী থেকে বিএনপি-জামায়াতের কোন নেতা আহত আইনুদ্দিনকে দেখতে এসেছে কিনা বা 

কোনভাবে যোগাযোগ করেছে কিনা এব্যাপারে জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকদিন আগে মাধবদী এলাকা থেকে তার সহপার্টি কয়েকজন রিকশাচালক তাকে দেখতে এসেছিল। এছাড়া দলীয় কোন নেতাকর্মী খোঁজ নেয়নি তার। 

সিএমএইচ'র সার্জারী বিভাগের প্রধান সার্জন ইশতিয়াক বলেন, আইনুদ্দিনের শারীরিক অবস্থা ভালো নয় আমরা তাকে লাইফ সাপোর্টে রেখেছি।আন্দোলন তার মাথার ডান ক্ষতস্থানটি  গুলিবিদ্ধ হয়। অপারেশন করে চিকিৎসক তার মাথা থেকে গুলি বের করা গেলেও গুলিবিদ্ধ ক্ষতস্থানটি  আস্তে আস্তে ড্যামেজ হতে থাকে। বর্তমানে সে জীবনের শেষ পর্যায়ে রয়েছেন। যে কোন সময় তার জীবন প্রদীপ নিভে যেতে পারে। তার পরিবারের লোকজনকে সে কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে একথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
 

নরসিংদীর খবর বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ