নরসিংদী প্রতিনিধি : মাধবদীতে এস এস এনার্জি পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সোলার প্যানেলে কারসাজি করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গ্রাহকের সাথে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায় গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সোলার প্যানেল এর অর্ডার নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে মানের হেরফের ও চাহিদার তুলনায় কম ক্ষমতাসম্পন্ন প্যানেল স্থাপন করে অনেক কারখানা মালিকদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান মাধবদীর মনোহরপুর এলাকার আবির টেক্সটাইল। তাদের চাহিদা ছিল ৫০০০০ ওয়াট। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, যে ৯০টি সোলার প্যানেলে ২৭০০০ ওয়াট স্থাপন করা হয়েছে স্থাপনকৃত প্যানেলের পেছনে ৫৫০ ওয়াট লেখা থাকলেও সোলার প্যানেলের সামনে কোম্পানির নামসহ স্পষ্ট করে ৩০০ ওয়াট লেখা রয়েছে। গ্রাহক যাতে তাদের প্রতারণা ধরতে না পারে সেজন্য প্যানেলের সামনের লেখাগুলো রং দিয়ে মুছে ফেলা হয়েছে। তাছাড়াও মুনু কোম্পানির ৫৫০ ওয়াট এর সোলার প্যানেল এর ডায়মেশন এর পরিমাপে ও রয়েছে ব্যবধান। এবিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের সাথে কথা বললে তিনি জানান এস এস এনার্জি পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড কে আমরা যে পরিমান চাহিদা দিয়েছি তারা সে পরিমান পন্য স্থাপন না করায় আমি বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছি না। এতে আমি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
এসএস এনার্জি পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অনলাইনে মুনু কোম্পানির সোলার প্যানেল এর যে পরিমাপ ডায়মেশন দেওয়া রয়েছে সরবরাহকৃত সোলার প্যানেল এর ডায়মেশন এর সাথে তার মিল না থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে দেরি হচ্ছে। ৫৫০ ওয়াট এর স্থলে ৩০০ ওয়াট দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থাপনকৃত সোলার প্যানেল পরিবর্তন করে নতুন সোলার প্যানেল লাগিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
অনুমোদনহীন ট্রান্সফরমার তৈরি ও বাজারজাত করার দায়ে কিছুদিন পূর্বে নরসিংদী জেলা প্রশাসক বরাবর হাছান আলী নামে একব্যাক্তি তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নিবন্ধন বিহীন প্রতিষ্ঠানে বৈদ্যুতিক কাজে ব্যবহৃত ট্রান্সফরমার মেরামত করা হলে গ্রাহক ও সমিতির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। সেই সাথে বড় ধরনের দূর্ঘটনাও ঘটতে পারে। অভিযোগে আরো বলা হয় বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সারাদেশে ৭২টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার উৎপাদন ও মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে এস এস এনার্জি পাওয়ার ইন্জিনিয়ারিং এর নাম নেই।
তবুও তারা কিভাবে ট্রান্সফরমার তৈরি ও বাজারজাত করছে সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৬জুন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট অফিস কক্ষে শুনানী হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্যাট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ সাংবাদিকদের জানায়, শুনানীতে এসএস এনার্জি পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানার পক্ষে ট্রান্সফরমার উৎপাদন করার জন্য সরকার অনুমোদিত কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
এসএস এনার্জি পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শুক্কুর আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমি ২০১৭ সাল থেকে অনুমোদন নিয়ে কারখানা পরিচালনা করে আসছি। অনলাইনে আপনার কোম্পানির নাম নেই, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনলাইনে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেছি। বিদ্যুৎ লাইসেন্সিং বোর্ডের উপপরিদর্শক মোঃ সারোয়ার বলেন, এসএস এনার্জি পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড আমাদের কাছে অনলাইনে আবেদন করেছে। আমাদের লোকজন কারখানা পরিদর্শন করে চাহিদা অনুযায়ী সবকিছু সঠিক পেলে তাদের ট্রান্সফরমার তৈরি ও বাজারজাত করার অনুমোদন দেওয়া হবে। অনুমোদন না নিয়ে তাদের উৎপাদিত পন্য বাজারজাত করলে তারা লাইসেন্স পাবে না বলে ও জানান তিনি।