স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর শিবপুরে সোহরাব হোসেন (৪৫) নামে এক স্কুল শিক্ষকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের নন্দিরগাও গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে তার মৃত্যু নিয়ে হত্যা না আত্মহত্যা? এ বিষয়ে স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নিহত সোহরাব হোসেন উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের চৌঘরিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবুল কালাম'র ছেলে। তিনি উপজেলার গড়বাড়ী এম এ রশীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
জানা যায়, রবিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিয়ে স্কুল থেকে বের হলেও বাড়ী ফেরেনি স্কুল শিক্ষক সোহরাব হোসেন। পরেরদিন সোমবার নন্দিরগাও গ্রামের পরিত্যক্ত ওই বাড়িতে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দিলে শিবপুর থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। তবে স্থানীয়দের ধারণা তাকে কেউ হত্যার পর ঝুলিয়ে রেখেছে।
গড়বাড়ী এম এ রশীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, গতকাল ১২ টায় ওনার শেষ ক্লাস ছিল। আমি ওই সময় স্কুলের কাজে উপজেলা শিক্ষা অফিসে চলে আসি।
এর আগে উনার শরিরটা ভাল লাগছে না ক্লাস শেষে বাড়ী চলে যাবেন বলে ছুটি নেন। আজ আমি যখন স্কুলে আসলাম তখন দেখলাম সোহরাব সাহেব প্রথম যে ক্লাসটা নেয় সেই ক্লাসের ছেলেরা বাইরে ঘুরাঘুরি করছে। তখন কেন ঘুরাঘুরি করছে এর কারণ জানতে চাইলে তাদের ক্লাসে শিক্ষক নেই বলে জানায়। সোহরার সাহেবের দুটি নাম্বারে ফোন করে তাকে না পেয়ে কিছুক্ষণ অফিস সহকারিকে ডেকে ওনার অন্য কোন নাম্বার আছে কিনা। সে তখন ওনার স্ত্রীর নাম্বারে ফোন দিলে তিনি তখন জানায় গতকাল স্কুল থেকে আর বাড়ী ফিরেনি শিক্ষক সোহরাব হোসেন।
এর কিছু ক্ষণ লোকজন স্কুলের দিকে ছুটে আসে। তারা এসে সোরহাব সাহেবের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি কি না জানতে চায়। এর পরপর নন্দিরগাও গ্রাম থেকে আমার মোবাইলে ফোন আসে এবং তার মৃত্যূ বিষয়টি নিশ্চিত করে। পরে আমরা সেখানে ছুটে যাই এবং তার মরদেহ ঝুলে থাকতে দেখি। তবে তার মৃত্যু স্বাভাবিক মনে হয়নি। কারণ ফাঁস নেওয়া ঝুলন্ত মানুষের মাটি থেকে নুন্যতম দূরত্বে থাকবে। কিন্তু সোহরাব সাহেবের বেলায় তেমনটা দেখিনি।তার পা মাটিতে লাগা অবস্থায দেখতে পেয়েছি। পা মাটিতে লাগা অবস্থায় কেউ মরতে পারে না।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে হত্যা না আত্মহত্যা সেট বলা যাবে। তবে নিহতের পরিবারে পক্ষ থেকে এখনও কেউ কোন অভিযোগ করেনি।