হলধরদাস: নার্স রিমা হত্যার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) নিহতের নিজ এলাকায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয় পিরিজকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ রায়পুরা উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ।
মানববন্ধনকালে হত্যাকান্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে বক্তব্য রাখেন- মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মন্জুর এলাহী, মির্জাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোমেন মিয়া, ছাত্রলীগ নেতা প্রসেনঞ্জিৎ রায়, রায়পুরা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য পলাশসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রায়পুরা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পিরিজকান্দি গ্রামের সেন্টু চন্দ্র প্রামাণিকের মেয়ে রিমা প্রামাণিক (১৮) পার্শ্ববতী ভৈরব উপজেলার ভৈরব সদরে ইউনাইটেড হাসপাতাল অ্যান্ড আর্থোপেডিক সেন্টারে নার্স হিসেবে গত দুই বছর যাবৎ কাজ করে আসছিলেন। গত ঈদের তিন দিন আগে তিনি ছুটি নিয়ে নিজ বাড়ি রায়পুরার পিরিজকান্দি গ্রামে চলে যান। শনিবার ঈদের আগের দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি ফোন দিয়ে ঈদের দিন ডিউটি করতে তাকে হাসপাতালে ডেকে নেয় । তাদের কথায় রিমা ঈদের দিন সেখানে গিয়ে কাজে যোগদান করেন।
কাজ শেষে রাতে পাশের বিল্ডিংয়ের পঞ্চম তলায় নার্সদের থাকার রুমে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন রীমা।
১০ জুলাই (রবিবার) ঈদের দিন রাতেই রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে নার্স রিমার। রাত শেষে ভোরে নিহত রীমার বাবাকে জানানো হয় যে, তার মেয়ে রিমা আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে রিমার বাবা দ্রুত ভৈরব চলে যান।
ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোনো এক সময় হাসপাতালের কয়েকজন মিলে তাকে ধর্ষণ শেষে গলাটিপে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করছে।
সোমবার (১১ জুলাই) সকালে পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
নিহত নার্স রিমার বাবা সেন্টু চন্দ্র প্রামাণিক সাংবাদিকদের জানান, আমার মেয়ে ঈদের আগে ছুটিতে বাড়ি আসে। গত শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি ফোন দিয়ে হাসপাতালে ডিউটি করতে বলে।
ঈদের দিন ডিউটি করল আমার মেয়ে কিন্তু রাত সাড়ে ৪টায় ফোন দিয়ে বলে রিমা আত্মহত্যা করেছে। পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে আমার মেয়ের যৌনাঙ্গে রক্তের দাগ রয়েছে। তারা আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে গলাটিপে হত্যা করেছে। আমি প্রথমে না বুঝে অপমৃত্যু মামলা করেছিলাম। মঙ্গলবার হত্যা মামলা করেছি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ গোলাম মোস্তফা সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি আত্মহত্যা না হত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে বলা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হাসপাতালের এমডি সুমনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে, রিমা হত্যা ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভৈরব থানা পুলিশ ইউনাইটেড হাসপাতাল অ্যান্ড অর্থোপেডিক সেন্টারের এমডি হানিফুর রহমান সুমনকে গ্রেফতার করেছে।