স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদী সদর হাসপাতালে বৃদ্ধা মহিলাকে চেয়ারে এগিয়ে দিতে গিয়ে মারধোরে শিকার হলেন দেলোয়ার হোসেন (৩৮) নামে এক ব্যক্তি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের বহির বিভাগে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়ে।
অভিযোগে জানা যায়, নরসিংদী সদর উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন অসুস্থ স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালের বহির বিভাগে আসেন।
এ সময় এক অসুস্থ বৃদ্ধ মহিলা কে বসার জন্য হাসপাতালের বারান্দা থেকে একটি চেয়ার খুঁজে এনে দেয় দেলোয়ার হোসেন। আর ওই অসুস্থ বৃদ্ধা মহিলাকে বসার জন্য চেয়ার এনে দেওয়াটাই তার জন্য কাল হলো। দেলোয়ার হোসেন হাসপাতালের বারান্দা থেকে একটি চেয়ার আনতে গেলে সেখানে কর্মরত এক ব্যাক্তি অকথ্য ভাষায় তাকে গালমন্দ করতে থাকে। গালমন্দ করার সময় প্রতিবাদ স্বরুপ দেলোয়ার হোসেন তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে তা ভিডিও করতে গেলে ওই ব্যক্তিসহ অজ্ঞাতনামা অপর এক ব্যক্তি দেলোয়ারের হাত থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে শার্টের কলার চেপে ধরে মারধর করতে থাকে।
এ সময় তাদের আরো কয়েকজন সহযোগী এগিয়ে আসে এবং তাকে রুমের ভিতর ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে আর ১০ জন ব্যক্তি এলোপাথাড়ি কিল ঘুষিসহ দিতে থাকে। এ অবস্থায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও চার পাঁচ জন মহিলাসহ তারা তাকে মারধর করতে থাকে এ সময় তার কাপড় চোপড় টেনে হেছড়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী ওই রুমের আটকে রাখা হয। পরে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করলে পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করে।
এদিকে এলোপাতাড়ি মারধরের ফলে দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার বিভিন্ন স্থানে নীলা পোলা জখম সহ আহত হয়। পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করার পর বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়। কিন্তু অবাক করার বিষয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিয়ে বরং দেলোয়ার হোসেন কেন ভিডিও করতে গেলেন এর জন্য কৈফিয়ত চাওয়া হয় তার কাছ থেকে। এবং প্রথম ব্যক্তিকে ডেকে এনে দেলোয়ারের কাছে মাফ চাইতে বলেই বিচার শেষ করেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কোন বিচার না পেয়ে অতঃপর আইনের হস্তক্ষেপ কামনা করে নরসিংদী সদর মডেল থানায় এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল বাশার বলেন, গতকাল এক ব্যক্তি অফিস কক্ষ থেকে চেয়ার বের করার সময় হাসপাতালের লোকজনের সাথে লোকটি ক্ষিপ্ত হয়ে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং তার মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে থাকে। বিষয়টি জানার পর আমি ওই লোককে ডেকে এনে মিটমাট করে দেই এবং যে ব্যক্তি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন তাকে তার কাছে মাফ চাওয়াই। কিন্তু তার স্ত্রীকে মহিলারা মারধরের বিষয়টির সত্যতা আমি খুঁজে পাইনি।
এব্যাপারে নরসিংদী সদর মডেল থানার এ এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে যাই, কোন পক্ষকেই ঘটনাস্থলে পাইনি। যাওয়ার আগেই তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেছিল।