স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. ফজলুর রহমান বলেছেন, কোন দেশে যখন স্বাধীনতা থাকে না তখন ওই দেশে সার্বভৌমত্বও থাকেনা । শেখ হাসিনার আমলে এসে বাংলাদেশ সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে। যে দেশের সেনাপ্রধান ও পুলিশ প্রধান দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে সে দেশে আর যাই থাক দেশের সার্বভৌমত্ব থাকেনা। বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে নরসিংদী জেলা বিএনপি আয়োজিত অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
"ফ্যাসিবাদ নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক" এই স্লোগানকে সামনে রেখে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নরসিংদীতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত দেখতে চায়। আমরা তাকে মুক্ত দেখতে চাই। আমি আজ নরসিংদী এসেছি শুধুমাত্র বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইতে। তবে কার কাছে চাইবো। এই ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকারের কাছে? না। আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা তাকে মুক্ত করে আনবোই ইনশাল্লাহ।
এড. ফজলুর রহমান বলেন একজন অসুস্থ মানুষ ক'দিন পর পর হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা নেন আবার এই অবস্থায় বাড়ি ফিরে যান। মানুষ এদেশের মানুষ খালেদা জিয়াকে সুস্থ দেখতে চায়। উনার বর্তমান বয়স ৭৮ বছর আমার ৭৭ বছর। আমি যদি সুস্থ সবল ভাবে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিতে পারি। তাহলে উনি কেন পারবেনা। দেশের মানুষ চায় সুস্থ খালেদা জিয়া মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই স্বৈরাচারী সরকারের মুখোশ উন্মোচন করুক। যেমনটা করেছিল ৯০ এর গণ আন্দোলনে। উনি নয়াপল্টনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুধু একবার আঙ্গুল তুললেই তার এই আঙ্গুলের ইশারায় দেশের আবাল বৃদ্ধ-বণিতা রাজপথে নেমে আসবে।
বেগম খালেদা জিয়া এখনো এই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। যার প্রমাণ তিনি বারবার রেখেছেন আওয়ামী লীগের মহাসচিব ওবায়দুল কাদের উনার সাথে জামানত হারিয়েছেন। এই মুহূর্তে গোপন ব্যালটে সাধারণ মানুষের ভোট নেওয়া হোক সেই ভোটে বেগম খালেদা জিয়া বিপুল ভোটে জয়ী হবে এটা আমি হলফ করে বলতে পারি। দেশের এই জনপ্রিয় নেতার আজ সর্বস্ব হারিয়েছে। উনার মত হতভাগ্য ও দুর্ভাগা আর একজনও নেই। রাজনীতি ওনার সব কেড়ে নিয়েছে। কেড়ে নিয়েছে স্বামী কেড়ে নিয়েছে সন্তান। মৃত্যু পথযাত্রী সন্তান কোকো বার বলেছিল আমি আমার মায়ের মুখটা দেখব, মায়ের মুখটা দেখব। কিন্তু সে দেখতে পারিনি। তাকে দেখতে দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, নরসিংদী বাসির উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই পরাধীনতার শৃংখল ভেঙ্গে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশেকে স্বাধীন করেছিলাম। আবার একবার যুদ্ধ করবো। তবে সে যুদ্ধ হবে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার যুদ্ধ। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। আমি আশা করব আপনার সেই আন্দোলনে আমাদের সাথে থাকবেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদীর জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকনের সভাপতিত্ব এবং সদস্য সচিব মঞ্জুর এলাহীর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরদার শাখাওয়াৎ হোসেন বকুল, অ্যাড. আব্দুল বাছেদ, এম এ জলিল, অধ্যাপক বিজি রশিদ নওশের, আকবর হোসেন, শহর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক একেএম গোলাম কবির কামাল, দীন মোহাম্মদ দীপু, খবিরুল ইসলাম বাবুল, আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সালমা আক্তার সপ্না প্রমুখ।
এ সময় নরসিংদী জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এলাকার সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন বলেন, এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এ সরকার ভোটারবিহীন প্রহসনের ডামি নির্বাচনে মধ্য দিয়ে দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসে আছে। ৫ পার্সেন্ট মানুষ ভোট না দিলেও আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সাথে প্রহসনের করে সরকার গঠন করে। সরকার দেশে মানুষের উন্নয়নের কথা না ভেবে বিরোধী দলগুলোকে দমনে ব্যস্ত। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মামলা হামলা ও হুলিয়া দিয়ে ডামি নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিজেদের হাতে ধরে রেখেছে।
সমাবেশকে ঘিরে দুপুরের পর থেকেই জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, থানা ও উপজেলা সহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নরসিংদী জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আসে। এ সময় সমাবেশের স্থলে যেন মানুষের ঢল নামে।