স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নরসিংদীতে আলোচনা সভা দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নরসিংদী জেলা বিএনপির উদ্যোগে এ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
নরসিংদী জেলা বিএনপির চিনিশপুরস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহবায়ক সদ্য কারামুক্ত নেতা খায়রুল কবির খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করা হয়।
নরসিংদী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মঞ্জুর এলাহীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. আব্দুল বাসেদ, আকবর হোসেন, একেএম গোলাম কবির কামাল, দীন মোহাম্মদ দীপু, খবিরুল ইসলাম বাবুল, আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক মহসিন হুসেন বিদ্যুৎ, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি।
এসময় নরসিংদী শহর বিএনপির সহ-সভাপতি কবির আহমেদ, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সালমা আহমেদ স্বপ্না, জেলা মৎস্যদলের সভাপতি হাবিবুর রহমান মিলন, শহর যুবদলের আহ্বায়ক মাহমুদ চৌধুরী সুমন, জেলা যুবদলের সহ সভাপতি হাসিব হাসান সোহরাব ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ ফকির রনিসহ জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকন বলেন, ভোটবিহীন স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগন প্রত্যাখান করেছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনই এর সবচেয়ে বড় প্রমান। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভোটারবিহীন ভোটকেন্দ্র গুলোর চিত্রই বলে দেয় বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়েছে। ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি না থাকলেও ভোট শেষে দেখা যায় ৩৫-৪০ পার্সেন্ট ভোট পড়েছে। ভোটারবিহীন কেন্দ্রগুলোতে এত ভূতুড়ে ভোট কোথা থেকে আসে তা আজ দেশের মানুষ জানতে চায়।
খায়রুল কবির খোকন বলেন, এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এ সরকার ভোটারবিহীন প্রহসনের ডামি নির্বাচনে মধ্য দিয়ে দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসে আছে। ৫ পার্সেন্ট মানুষ ভোট না দিলেও আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সাথে প্রহসনের করে সরকার গঠন করে। সরকার দেশে মানুষের উন্নয়নের কথা না ভেবে বিরোধী দলগুলোকে দমনে ব্যস্ত। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মামলা হামলা ও হুলিয়া দিয়ে ডামি নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিজেদের হাতে ধরে রেখেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিরোধী দলগুলোর প্রতি যে দমননীতি অবলম্বন করছে তাতে মৃত্যু পথযাত্রী অসুস্থ নেতাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এদেশে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা করেছেন। সরকার দেশের সাবেক রাষ্ট্র প্রধানের সাথে অমানবিক ব্যবহার করে যাচ্ছে। বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। এ অবস্থায় সরকার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের শুধু স্বাধীনতার ঘোষকই নন তিনি বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। তিনি দেশের মানুষের মত প্রকাশের স্বার্থে এদেশে বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। জিয়াউর রহমান তার কর্মদক্ষতা দিয়ে ওআইসি পদক লাভ করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তায় কুচক্রী মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে হত্যা করেছিন। সেদিনের সেই মহলটি ভাবতে পারেনি জীবিত জিয়াউর রহমানের চেয়ে মৃত জিয়া অনেক শক্তিশালী। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর ৪৩ বছর পর সেটাই প্রমাণ করে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশ আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন সেনা প্রধান, পুলিশ প্রধান কিলিং মিশনে ও দূর্নীতির সাথে জড়িত থাকে দেশের সরকার কি সেটা জানে না। জেনে শুনে তাদেরকে সেখানে বসানো হয়েছিল। একজন বেনজির আজ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। দেশে বিদেশে তার স্ত্রী সন্তানসহ নামের বেনাম বাড়ী-গাড়ী বিভিন্ন কোম্পানি গড়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালের আজকের এদিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে।