হলধর দাস: নরসিংদীর বেলাবোতে জাল দলিল চক্রের হোতা ভূমিদস্যু আব্দুল কুদ্দুছ ভূইয়া ও তার ছেলে জসীমউদ্দিন ভূইয়ার অপকর্মের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন ভূক্তিভোগিরা।
নরসিংদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী তিন ভাই বেলাবো উপজেলার গাংকুল পাড়ার প্রয়াত শাহাবুদ্দিন মিয়ার ছেলে রুমেল মিয়া,আলফাজ উদ্দিন, শামসুদ্দিন রতন এবং প্রতিবেশী মোঃ মুকুল মিয়া।
তারা প্রতিবেশী সুরুজ আলী ভূইয়ার ছেলে ভূমিদস্যু আব্দুল কুদ্দুছ ভূইয়া ও তার ছেলে জসীমউদ্দিনের কুকীর্তি, জুলুম,অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
লিখিত অভিযোগে রুমেল মিয়া বলেন, আমাদের দাদা নোয়াজ আলী ১৯৭৯ সালে বেলাবো এবং চর বেলাবো মৌজায় আমাদের তিন ভাইয়ের নামে জনৈকা জুবেদা খাতুনের কাছ থেকে ৪৪ শতাংশ জমি কিনে দেন। সেই জমি নামজারি করে যথারীতি খাজনা দিচ্ছি এবং জমি ভোগদখল করে আসছিলাম।
সেই দলিলে স্বাক্ষীও ছিলেন আব্দুল কুদ্দুস ভূইয়া।
আমার বাবা শাহাবুদ্দিন মিয়া ১৯৮৯ সালে চরম অর্থসংকটে থাকায় আমাদের তিন ভাইয়ের নামে কেনা জমি প্রতিবেশী কুদ্দুস ভূঁইয়ার নিকট মাত্র দুই হাজার টাকায় বন্দক দেয়। তখন কুদ্দুস ভুইয়া সাদা কাগজে আমার বড় ভাই আলফাজ উদ্দিনের একটি স্বাক্ষর রাখেন।
দীর্ঘদিন পর, গত বছরের শেষ দিকে আমরা তিন ভাই পিতার বন্দক রাখা সেই জমি ফিরিয়ে নিতে আব্দুল কুদ্দুস ভূইয়ার কাছে যাই। তিনি বলেন, তিনি না কি জুবেদা খাতুনের ছেলে মোসলে উদ্দিন ও আক্কাস আলীর কাছ থেকে ১৯৭৮ সালে এই জমি কিনে নিয়েছেন। আমাদের প্রশ্ন, যে জমি আমরা জুবেদা খানম এর কাছ থেকে ১৯৭৯ সালে কিনেছি, সেখানে স্বাক্ষী হিসেবে আব্দুল কুদ্দুস ভূঁইয়া সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সেই আব্দুল কুদ্দুস ভূঁইয়া কী করে বলেন এর এক বছর আগেই তিনি সেই জমি কিনেছেন? তিনি যদি ১৯৭৮ সালে জমিটি কিনে থাকেন তাহলে আমার দাদার কেনা জমিতে তিনি কী করে সাক্ষী দিলেন?
চরম অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমরা জনৈক আলমগীর হোসেন এবং শাহ আলম এর কাছে ৯০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেই।
তারা কেবল আমাদের এগারো লাখ টাকা পরিশোধ করে। ৭৯ লাখ টাকা বাকি রয়েছে। আমাদের সহজ সরল পেয়ে এখন মাত্র ১১ লাখ টাকা দিয়ে পুরো জমি নিতে চাইছে আলমগীর এবং শাহ আলম। আমাদের বাকি টাকা চাইলে তারা টাল বাহানা করে। ক্রেতা আলমগীর হোসেনের স্ত্রী, যিনি বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার অডিট অফিসার, তিনি জমিটি কেনার সময় বলেছিলেন টাকা নিয়ে কোন চিন্তা করবেন না। টাকা আমি দিবো। সেখানেও ঝামেলা করছেন কুদ্দুছ ভূইয়া।
পরবর্তীতে আমরা অনেকবার আলমগীর হোসেন এর স্ত্রীকে বার বার কল দিলে ওনি আমাদের কল রিসিভ করেন না। আমাদের টাকা দিবে দিচ্ছে বলে নানান তালবাহানা করে আমাদেরকে টাইম দিয়েই যাচ্ছে।
বর্তমানে আমাদের জমি অবৈধভাবে দখলে রেখে কুদ্দুস ভূঁইয়া আমাদের বিরুদ্ধে নরসিংদী জজ কোর্টে হয়রানি মূলক মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছেন।
পরবর্তীতে এলাকার ব্যক্তিদের মাধ্যমে আমাদের কাছে খবর পাঠায় উক্ত জমি তাদের নামে লিখে দিলে আমাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিবেন। কুদ্দুছ ভূইয়া ও তার ছেলে আমাদের সরলতার সুযোগে জাল দলিল করে জমিটি নিজের নামে লিখে নেয়ার অপচেষ্টা করছেন।
সমাজের অসহায় ও গরিব মানুষ হিসেবে এই ভূমিদস্যু আব্দুল কুদ্দুস ভূইয়ার কাছ থেকে আমাদের সম্পত্তি যাতে ফেরত পেতে পারি সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছি। একই সাথে আমাদের বিক্রি করার জমির বাকি টাকা যাতে পাই সেজন্য সুধীজনদের সাহায্য কামনা করছি।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অতীতে গরীবের রিলিপের চাউল চুরির দায়ে দুই দুই বার জেল খাটেন আব্দুল কুদ্দুছ ভূইয়া । তারই ছেলে জসিম ভূঁইয়া এলাকায় সমাজ বিরোধী নানা কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন এবং অসৎ নারী নিয়ে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপেও লিপ্ত রয়েছে।