বেলাবতে খালের ভরাটকৃত অংশ কেটে দেয়ায় জলাবদ্ধতার নিরসন

আলমগীর পাঠান: একটি পুরনো খালের কিছু অংশ একটি  স্বার্থানেষী মহল ভরাট করে ফেলায় দীর্ঘ তিনবছর ধরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছিল গ্রামবাসি। স্থানীয়  ওই স্বার্থানেস্বী মহল  খালটি ভরাট করে স্থাপনা নির্মান করায় পুরো গ্রামজুড়ে লেগে থাকতো জলাবদ্ধতা।

জলাবদ্ধতা নিরশনে গত দুই বছরে বিভিন্ন দপ্তরে গ্রামবাসির পক্ষে দেয়া হয়েছে একাধিক লিখিত অভিযোগ করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সম্প্রতি টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ও খাল ভরাট করে ফেলায় গ্রামের শত শত একর ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে তলিয়ে যায়। ফলে জমির ফসল নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় স্থানীয় কৃষকেরা। এছাড়াও  অধিকাংশ বসতভিটাসহ বিভিন্ন পোল্ট্রি খামারে পানি ঢুকে পড়ে। এতে সাধারণ জীবনযাত্রা ব্যাহত হয় স্থানীয়দের।

বাধ্য হয়ে পুরো গ্রামবাসি একত্রিত হয়ে সম্মিলিত ভাবে খালের ভরাট করা অংশের মাটি সরিয়ে ড্রেন করে দেয়। কিন্তু গ্রামবাসির এ উদ্যোগে স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটে ওই স্বার্থানেস্বী মহলটির। তারা গ্রামবাসির সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে।

এমনই ঘটনা ঘটে বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের চরছায়েট গ্রামের পশ্চিমপাঁড়া গ্রামে। শনিবার (৭ অক্টোবর) এমনই এক অদ্বুদ্ধয় পরিবেশের সৃষ্টি হয় ওই গ্রামে।  তর্কাতর্কির খবরে বেলাব থানা পুলিশ ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে উপস্থিত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।

এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায়,বিন্নাবাইদ পশ্চিমপাঁড়া গাংকুল পাঁড়া এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদের তীরঘেষে একটি পুরানো খালের পানি এলাকার ফসলি জমিতে সেচ সুবিদা ছাড়াও পানি নিস্কাশন  হতো দীর্ঘদিন ধরে। গত কয়েকবছর আগে এ খালের কিছু অংশের জায়গা কিনে নিয়ে খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মান করে  চরাছায়েট গ্রামের শুকুর আলী, আবুল কাশেম, বজলু মিয়া, নুরু মিয়াসহ কয়েকজন স্বার্থানেস্বী মানুষ। খাল ভরাটের ফলে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বর্ষা মৌসুমে ও বৃষ্টির মৌসুমে পুরো গ্রামজুড়েই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এ জলাবদ্ধতা নিরশনে ও ভরাট করা খাল খুলে দেয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা পায়নি।

সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে চরছায়েটসহ আশেপাশের গ্রামজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বসত ভিটা ও ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক লোক একত্রিত হয়ে ভরাট খালে কোদাল চালায়। এসময় শুকুর আলীসহ অন্যান্যরা গ্রামবাসির সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

এদিকে  দীর্ঘদিনের ভরাট খাল খুলে সাময়িকভাবে হলেও পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করায় হাজারো এলাকার মানুষের মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির হাসি। তারা স্থানীয় প্রসাশনের কাছে এর স্থাযীভাবে এ সমস্যার সমাধান চায়।

এলাকাবাসি জানান, এ খালটি  দীর্ঘদিনে পুরানো  একটি খাল । এ খাল দিয়ে চরছায়েট গ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের পানি নিস্কাশন হয়। কিন্তু শুকুর আলী. আবুল কাশেম, বজলু মিয়া, নুরু মিয়াসহ কয়েকজন ব্যক্তি খালের একটি অংশ ভরাট করে  ওই স্থানে স্থাপনা নির্মান করে। এতে বৃষ্টি ও বর্ষার পানি আটকে কয়েকটি গ্রামে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। আর এই জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেতে গ্রামবাসি সম্মিলিতভাবে  ভরাট করা স্থানে মাটি কেটে ড্রেন মত করে দেয়।

অভিযুক্ত শুকুর আলী বলেন ,খালের যে জায়গা ভরাট করা হয়েছে। এই জায়গা আমি কিনে নিয়েছিলাম। আমার কেনা জায়গায় আমি মাটি ভরাট করে গরুর খামার স্থাপন করেছি।

খাল ভরাট করা আলতাফ হোসেন নামে অপর এক ব্যক্তি বলেন, খাল যেখানে ভরাট করা হয়েছিল সে অংশটি আমাদের ক্রয় করা ছিল। এখন গ্রামে জলাবদ্ধতা। তা গ্রামবাসির সুবিধার্থে তারা ভরাট করা স্থানে ড্রেন করছে এতে আমাদের আপত্তি নাই।

বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া স্বপ্না বলেন, খাল ভরাট করে ফেলায় বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ফসলি জমি নষ্ট হয়ে গেছে। বসত ভিটায় পানি ঢুকে বাড়ীঘরে পানি উঠতো। এ থেকে উত্তোরনের জন্য গ্রামবাসি সাময়িকভাবে ভরাট করা খালের স্থানে ড্রেনের মত করে কেটেছে।

বেলাব উপজেরা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পারি খালের যে স্থানে ভরাট করা হয়েছে সে স্থানটি শুকুর আলীসহ কয়েকজনের। তাৎক্ষনিকভাবে কাগজপত্র দেখা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযুক্ত ও গ্রামবাসির সাথে কথা বলে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের জন্য সাময়িকভাবে পানি যাতে যেতে পারে সেজন্য ভরাট করা খালটির কিছু অংশ কেটে ড্রেনের মত করার জন্য বলে এসেছি।

বেলাব থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তানভীর আহমেদ বলেন, ভরাট খাল কাটাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসি খাল ভরাটকারীদের  ঝগড়ার সম্ভাবনা ছিল। এখবর শুনে আমি পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক পযায়ে নিয়ে আসি।

বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা জান্নাত তাহেরা বলেন, জলাবদ্ধতার ব্যাপারে সাময়িক ভাবে খালের কিছু অংশ কেটে ড্রেনের মত করে দেয়া হয়েছে যাতে আপাতত পানি নিস্কাষন হয়। তবে আমরা খুব শ্রীঘ্রই ওই এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে যে স্থান দিয়ে খাল কাটলে সুবিধা হয় সেই স্থানে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সরকারী ভাবে খাল কাটার ব্যবস্থা করবো।
 

শিবপুরে উৎপাদিত সবজির ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ চাষিরা

নরসিংদীতে শীতকালীন সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক, কমেছে দাম

এবার ১৯ হাজার ৫শ কোটি টাকার কৃষিঋণ প্রদান করা হবে

রায়পুরায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ 

নরসিংদীতে বোরো ধান চাষে ব‍্যস্ত কৃষকরা

পলাশে রোপা আমন নিয়ে স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষায় কৃষক