স্টাফ রিপোর্টার: কোরআন শরিফের প্রথম বাংলা অনুবাদকারী ভাই গিরিশচন্দ্র সেনের বাড়ি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সরকারে এই মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) প্রকাশিত এক গেজেটে ভাই গিরিশ চন্দ্র সেনের নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনার বাড়িটিকে প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়।
গেজেট অনুযায়ী নরসিংদী সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের পাঁচদোনা গ্রামের বাবুরহাট মৌজার ১৩.৪ শতাংশ জমি এই প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষিত এলাকার আওতাভুক্ত। ওই জমিটি রেকর্ডের আগেই ভাই গিরিশচন্দ্র সেন মৃত্যুবরণ করায় তার নামে খতিয়ানভুক্ত হয়নি। জমিটি আরএস রেকর্ড অনুযায়ী অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে সরকারের দখলে আছে। ওই জমিতেই গিরিশচন্দ্রের বাড়িটি অবস্থিত।
১৮৩৪ সালে নরসিংদী সদর উপজেলার পাচঁদোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গিরীশ চন্দ্র সেন। ১৮৭১ সালে গিরিশচন্দ্র সেন সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন। ১৮৭৬ সালে ৪২ বছর বয়সে তিনি মৌলভী এহসান আলীর কাছে আরবি ব্যাকরণ শেখেন। ৩ বছর কঠোর সাধনার পর ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলায় গিরিশচন্দ্র সেনই সর্বপ্রথম ১৮৮১ সালে পবিত্র কোরআন শরিফের প্রথম পারা বাংলা অনুবাদ করেন, যা শেরপুর চারুচন্দ্র প্রেস থেকে ছাপা হয়।
পরবর্তী সময়ে ৬ বছর কঠোর পরিশ্রম করে সম্পূর্ণ কোরআন শরিফের বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করে বিশ্ববাসীকে চমৎকৃত করেন তিনি। তার প্রকাশিত ৩৫টি গ্রন্থের মধ্যে ২২টি ইসলাম ধর্ম বিষয়ক।
ভাই গিরিশচন্দ্র সেন ১৯১০ সালের ১৫ আগস্ট পরলোক গমন করেন। পরে নরসিংদীর পাঁচদোনা গ্রামের বাড়িতে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
গিরিশ চন্দ্রের ওই বাড়িটি দীর্ঘদিন অযত্ন ও অবহেলায় ছিল। ইতোমধ্যে বাড়ির একটি অংশ বেদখলও হয়ে যায়। পরে নরসিংদী প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা কেন্দ্র ঐতিহ্য অন্বেষণের মাধ্যমে নরসিংদী জেলা প্রশাসন বাড়িটি সংস্কার করে জাদুঘরে রূপ দেয়।