স্টাফ রিপোর্ট: নরসিংদীর বেলাবতে নেশাগ্রস্ত স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম অহিদুজ্জামান ওরফে অমৃত (৬৫)। বুধবার রাতে উপজেলার সল্লাবাদ ইউনিয়নের নিলক্ষীয়া গ্রামে এই হত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহত অহিদুজ্জামান ওরফে অমৃত বেলাব উপজেলার সল্লাবাদ ইউনিয়নের নিলক্ষীয়া গ্রামের মৃত মো. সুলতান মিয়ার ছেলে। তিনি নিয়মিত মাদক সেবন করতেন বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আল-আমিন জানান, গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে থানা পুলিশ সংবাদ পায় নিলক্ষীয়া গ্রামে বাড়ির পাশে এক ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ পড়ে আছে। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় লাশটি অহিদুজ্জামানের।লাশ উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক তদন্তে নামে পুলিশ।
এসময় নিহতের বাড়ির ঘরের দরজায় সামান্য রক্তের দাগসহ কিছু আলামত দেখে পুলিশের সন্দেহ হয় ঘরের ভেতরেই হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। এসময় পুলিশ নিহতের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বামীকে খুনের কথা স্বীকার করেন এবং হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা আক্তার পুলিশকে জানায় স্বামী অহিদুজ্জামান ওরফে অমৃত নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রতি রাতেই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। বুধবার রাত ৯টার দিকে ঘরে এসেই তার সঙ্গে ঝগড়া ও গালিগালাজ শুরু করেন।
তাদের কথা কাটাকাটি একসময় হাতাহাতিতে রূপ নেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে কথা কাটাকাটির সময় স্বামী অহিদুজ্জামান ঘরে থাকা দা নিয়ে আয়েশাকে কোপ দিতে যায়। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আয়েশা তাঁর স্বামীর হাত থেকে দা ছিনিয়ে নিয়ে স্বামীর গলায় কোপ বসিয়ে দেন। এতে তিনি খাটের ওপর লুটিয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান।
অহিদুজ্জামান মারা গেছেন নিশ্চিত হওয়ার পর লাশটি আয়েশা আক্তার কোলে তুলে বাড়ির উঠানে নিয়ে ফেলে আসেন। পরে ঘরে ফিরে রক্ত লেগে থাকা খাটের কম্বল ও কাঁথা একটি বালতিতে করে টিউবওয়েলে নিয়ে ধুইয়ে ফেলে। হত্যায় ব্যবহৃত দা ধুইয়ে মুছে খাটের নিচে রেখে দেন। সবকিছু ঠিকঠাক গুছিয়ে রাখার পর আবার খাটে শুইয়ে পড়েন। হত্যার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ঘরের বাইরে বেরিয়ে প্রতিবেশীদের জানান, কে বা কারা তার স্বামীকে হত্যা করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন জানান, পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা আক্তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এই হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের ছেলে ইব্রাহিম খলিল বাদী হয়ে মা আয়েশা আক্তারকে আসামি করে বেলাব থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আয়েশা আক্তারকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।