মকবুল হোসেন: নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার পাইকারচর ইউনিয়নস্থ চরভাসানিয়া গ্রামে প্রায় ৫৫০ শতক জমির উপর নির্মিত জামিয়া মুহাম্মাদিয়া ও এতিমখানা মাদ্রাসা।
মেঘনানদীর তীর ঘেষে পাইকারচর ইউনিয়নের সর্ববৃহৎ ঈদগাঁহ এবং কবরস্থানের পাশে সবুজ শ্যামল সুন্দর প্রকৃতির মাঝে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত। ঢাকার প্রাচীণতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদের তৎকালীন প্রিন্সিপাল মুজাহিদে মিল্লাত আল্লামা শামছুদ্দীন কাসেমী রহ. এর পরামর্শক্রমে মরহুম ইঞ্জিনিয়ার নুরুর রহমান সাহেব ১৯৯৫ সনে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন,যা আজ-অব্দি নরসিংদির বুকে সুবাস ছড়িয়ে যাচ্ছে।
২০১৫ সনে প্রতিষ্ঠাতা জনাব ইঞ্জিনিয়ার নুরুর রহমান সাহেবের ইন্তেকালের পর তাঁর সুযোগ্য সন্তানরাও বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিন্দুমাত্র পিছিয়ে নেই। সন্তানদের পাশাপাশি এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় মাদ্রাসাটি এলাকার মধ্যে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে।
১৯৯৫ - ২০১২ ইং পর্যন্ত ধীর গতিতে এগোলেও ২০১২ সালে টিনের ভাঙা ঘরে ৫৫ জন ছাত্র নিয়ে যাত্রা শুরু করেন অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা মুফতি হাবিবুল্লাহ। তিনি তার দূরদর্শী চিন্তা ও পরিশ্রমের ফলে মাদ্রাসার অবকাঠামো পরিবর্তন করতে সক্ষম হন। মাদ্রাসাটি বর্তমান ৫ টির অধিক টিনসেড বিল্ডিং এবং প্রায় ৫৫০ জন ছাত্র, ৩৯ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর সমন্বয়ে ইতোমধ্যে নরসিংদী জেলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সুখ্যাতি ছড়াতে শুরু করেছে।
বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে শীর্ষস্থানের সাফল্যও অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাক এর অধীনেও প্রতিবছর মেধাতালিকাসহ প্রায় ত্রিশোর্ধ ছাত্র মুমতাজ হয়ে থাকে।
বেফাকের ২০২৪ইং এর ৪৭ তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায়ও হিফজ বিভাগে ১ম স্থানসহ পুরো মাদ্রাসায় মেধা তালিকায় মোট ১৩ জন স্থান পেয়েছে এবং মোট ৩২ জন ছাত্র মুমতাজ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
ধারাবাহিক সাফল্যে এলাকাবাসী সহ সকল মুহিব্বীনগণ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মাদ্রাসাটির প্রিন্সিপ্যাল মুফতি হাবিবুল্লাহ, তিনি আমাদের জানান,মাদ্রাসাটির প্রত্যেক শিক্ষক অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রমী এছাড়াও মাদ্রাসার কমিটি ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমরা এ সাফল্য অর্জন করতে পেরেছি,ভবিষ্যতে আরো ভালো পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই এ মাদ্রাসাকে।
মুফতী হাবিবুল্লাহ আরো বলেন,এই বাগান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাগান এই বাগানের ফুল কলিরা (ছাত্ররা) আমাদের কাছে আমানত।
এই বাগানের দরদী মালীর ভূমিকা পালন করছেন বর্তমান আরজাবাদ মাদরাসার সম্মানিত প্রিন্সিপাল আমার সম্মানিত উস্তাদ আল্লামা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া দা. বা.
আর মাদ্রাসাটির প্রধান নির্বাহি পরিচালক, অধ্যাপক ডা.এবিএম মাহাবুব রহমান জানান,আমরা চাই আমাদের মাদ্রাসাটি একদিন দেশের শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে পৌঁছাক,আজ পর্যন্ত এ সফলতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রথমত আল্লাহ তাআলার দ্বিতীয়ত মাদ্রাসার ডোনার,শিক্ষক ও এলাকাবাসীর প্রতি। কারণ, কওমি মাদ্রাসা মানুষের দানেই চলে,আমাদের সহযোগিতার পাশাপাশি সকলের সহযোগিতা থাকায় মাদ্রাসাটি সফলতা অর্জন করতে পেরেছে,ভবিষ্যতে আরো ভালো করবে এটাই আমাদের কামনা।