নিজস্ব প্রতিনিধি : পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে পুত্রকে বঞ্চিত করা এবং পুত্রের ক্রয়কৃত সম্পত্তি জবরদখলে রাখার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে পিতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের দড়িপুরা গ্রামে। পুত্র মো: সালাহ উদ্দিন তাদের পরিবারের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে প্রায় ১৪ বছর আগে সৌদি আরব চলে যায়। সেখানে চাকরিকালীন সময়ে তিনি বাড়িতে পিতা হাজ্বী নুরুল ইসলামের নামে প্রচুর পরিমাণে টাকা পাঠাতেন।
এতে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসে। পুত্রও মাঝে মধ্যে সৌদি আরব থেকে বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো। তাদের পরিবারের মধ্যে আনন্দ বন্যা বয়ে যেত। ২০১১সালে পরিবারের স্বইচ্ছায় একই গ্রামের মহিজ উদ্দিনের মেয়ে শিলা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনের আবদ্ধ হন সালাহ উদ্দিন। দাম্পত্য জীবনে তাদের এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
এতে করে তাদের সংসার সুন্দর ভাবেই চলছিল। কিন্তু এরই মধ্যে বাধ সাদলেন সালাহ উদ্দিনের পিতা হাজ্বী নুরুল ইসলাম। তিনি পুত্রের শশুড় মহিজ উদ্দিন নিকট যৌতুক দাবি করে বসেন।
যৌতুক হিসেবে তিনি মোটা অংকের টাকা, মোটর সাইকেল, আসবাব পত্রসহ অনেক কিছু দাবি করেন। নতুবা পুত্রবধূ শিলা বেগমকে তালাক দিতে পুত্রের উপর চাপ সৃষ্টির হুমুকি প্রদান করেন। পিতার এই যৌতুকের কথা এবং পুত্রবধূকে তালাক দেওয়ার কথা শুনে পুত্র সালাহ উদ্দিন হতবাক হয়ে পড়ে। পিতার এই অন্যায়-অবিচারের কথা সালাহ উদ্দিন কিছুতেই মানতে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় পিতা- পুত্রের দ্বন্দ্ব।
হাজ¦ী নুরুল ইসলাম পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে পুত্র সালাহ উদ্দিন এবং তার শশুড় মহিজ উদ্দিনের পরিবারের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন। তিনি পুত্রকে পৈত্রিক কোন জায়গা জমি দিবে না বলে ঘোষনা দিয়েছেন। শুধু তাই নয় পুত্র সালাহ উদ্দিনের রোজগার করার টাকা দিয়ে ক্রয় করা জমিও জবরদখল করে রেখেছেন। এমন কি সালাহ উদ্দিনের বাড়িতে প্রবেশ করার রাস্তাটিও বন্ধ করে দিয়েছে। ইতি মধ্যে বাড়িতে একাকি থাকার সুযোগে পুত্রবধু শিলা বেগমের উপর দুই দফা সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হাজ্বী নুরুল ইসলামের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তাদের পরিবারের লোক জন গত ৬ মার্চ অন্ত:স্বত্তা শিলা বেগমের উপর হামলার করার ফলে তিনি গুরুত্বর আহত হন। এই হামলায় স্বক্রিয় অংশগ্রহন করেন জহির উদ্দিন, আশিক, সালমান, আছমা বেগম, কুলছুম বেগম, রিতু বেগম সহ অন্যান্যরা। আহত শিলা বেগম বর্তমানে শিবপুর সরকারি হাসপাতেল চিকৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
পিতা-পুত্রের দ্বন্দ্ব এবং এইসব ঘটনার ব্যপারে জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান নাদিম সরকার, ইউপি সদস্যসহ এলাকার গন্যমাণ্য ব্যক্তিরা কয়েক দফা শালিশ দরবারে মিমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ পিতার একগুয়েমি মনোভাবের কারণে, শালিশ দরবার কারীরা অসহায় হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী জানায়, এই ঘটনা শুধু পিতা-পুত্রের দ্বন্দ্বের মাঝেই সীমাবব্ধ নয়, থানা-পুলিশ এবং কোর্ট-কাছারি পর্যন্ত গড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাজী নুরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।