স্টাফ রিপোর্টার
নরসিংদীর মাধবদী থানার কাঁঠালিয়া ইউনিয়নে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে বাড়ির চারপাশে বাঁশের খুঁটি পুঁতে বেড়া দিয়ে একটি অসহায় পরিবারের বসতবাড়ি জবরদখলের পাঁয়তারা করছে একদল ভূমিদস্যু। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে ট্রিপল নাইনে কল করে ও মিলেনি প্রতিকার।
গত বৃহস্পতিবার নরসিংদীর মাধবদী থানাধীন কাঠালিয়া ইউনিয়নের খাস কল্লাতপুর গ্রামের শেখ ডালিমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, একই এলাকার মিজান মিয়া কতিপয় ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে ডালিমের বাড়ির সামনের জমি, রান্নাঘর ও আশপাশের রাস্তা সম্পূর্ণরূপে অবৈধভাবে বেড়া দিয়ে জবরদখলে নেয়।এসময় তারা তাদের টিউবয়েল ও রান্নাঘরসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় স্থান দখলে নিয়ে যায় ফলে ভূক্তভুগি পরিবারটি রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়া ও বাড়ি থেকে বের হওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় অবরুদ্ধ ও অনাহারী হয়ে পড়ে।পরে অবস্থা বেগতিক দেখে ট্রিপল নাইনে ফোন করে পুলিশের সহায়তা কামনা করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সার্বিক পরিস্থিতি দেখে আইলে থাকা বেরা খুলে দেয়। পুলিশ চলে যাবার পরপরই সন্ত্রাসীরা আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায় এবং মিজান তার দল নিয়ে আবার বেড়া লাগিয়ে দেয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাধবদী থানার কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের খাস কল্লাতপুর গ্রামের মৃত ছাবেদ আলীর ছেলে শেখ ডালিমের ক্রয়কৃত বাড়িটি একই এলকার
মৃত জজ মিয়ার ছেলে মিজান মিয়া (৩৫),মৃত আলমাছ মিয়ার ছেলে শাহাজুদ্দিন (৩৫),নেয়াজ উদ্দিন( ৫০ ), জজ মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান(৩০), ওয়াদুদ মিয়ার ছেলে জসিমউদদীন( ৪২)সহ স্থানীয় ভূমিদ্যুস্যদের ১০/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত একই এলাকার মৃত ছাবেদ আলীর ছেলে শেখ ডালিমের ক্রয়কৃত বসত বাড়িটি বাঁশ ও রঙিন তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা অবস্থায় স্থানীয় মোঃ আলাল মিয়ার ছেলে ও আওয়ামীলীগ নেতা আবু সাইদ হাসান( ৩২) সাংবাদিকদের টাকার বিনিময়ে নিউজ করতে নিষেধ করে।এসময় তিনি বলেন, এই বিষয়ে নিউজ কইরেন না, প্রয়োজনে টাকা লাগে টাকা দিমু।
এব্যাপারে বাড়ির মালিক ডালিম বলেন,আজ চারদিন ধরে মিজান মিয়া তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমার বাড়িঘরে বেড়া দিয়ে আমার পুরো পরিবারকে গৃহবন্দি করে রেখেছে। ইতিপূর্বে ও সে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে।
আমি এই বিষয়ে মাধবদী থানায় একটি অভিযোগ করেছি। কিন্তু এ পর্যন্ত আমি প্রশাসনের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাইনি। সে অত্যন্ত জুলুমবাজ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তার ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। স্থানীয় দালালদের সে টাকা দিয়ে কিনে ফেলে তাই তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে চায় না। তার এ সকল কর্মকান্ড থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ বলেন, ভোক্তভোগী শেখ ডালিমের জমির কাগজপত্র সব সঠিক। একটি স্থানীয় ভূমিদস্যুর দল সমাজে টাকার জন্য নানান উস্কানিমূলক ঘটনা সৃষ্টি করে রাখে।
এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা পালন করা উচিত।
স্থাসীয় এলাকাবাসী হরমুজ আলী (৫৫) বলেন,আমাদের সমাজটাকে অশিক্ষিত একদল দালালরা লুটেপুটে খাচ্ছে। ওদের সঠিক বিচার করার কেউ নেই। তাদের ব্যাপারে কেউ মুখ খুললেই হত্যার হুমকি দেয় তারা। তবে এই নিয়ে বহুবার স্থানীয় পর্যায়ের সালিশ বৈঠকে বসেও মিজান ও তার সন্ত্রাসী দলের উচ্ছৃংখলতার কোন সমাধান করা যায়নি।
এব্যাপারে ভূমিদস্যু মিজানকে একাধিকবার ফোন দিয়ে ও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আনজত আলী নামের এক অসহায় ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলায় মিজানের ভাই মতিউর (৩০), সেলিম(৩০), স্থানীয় ভূমিদস্যু সুন্দর আলী (৬০) ও কেরামত আলী কমু (৫৮) মিলে আনজত আলীকে বেদম মারপিট করেছে।
ট্রিপল নাইনে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া মাধবদী থানার এসআই মোঃ রনি বলেন- 'ট্রিপল নাইনে কল পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে তাই। সেখানে গিয়ে তাদের বেড়া খুলে দিয়ে আসি এবং তাদের উভয় পক্ষকেই জমির সঠিক কাগজপত্র নিয়ে আদালতের মাধ্যমে সমাধান করতে বলে আসি। তাছাড়া এ ব্যাপারে থানায় একটি লিখিত আবেদন করতে বলি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।