স্টাফ রিপোর্ট: নরসিংদীতে স্বামীর বাড়ি থেকে সানজিদা বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (১১ জুন) রাতে সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের উত্তর বাগহাটা এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
সানজিদার বাবাকে মোবাইল ফোনে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার কথা জানালেও তিনি বলছেন এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
নিহত সানজিদা সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের উত্তর বাঘহাটা এলাকা মালয়েশিয়া প্রবাসী মাহবুব আলমের স্ত্রী। সে পাঁচদোনা ইউনিয়নের ভাটপাড়া এলাকার আলতাফ হোসেনের মেয়ে।
নিহতের স্বজনরা জানায়, ৯ বছর আগে সানজিদার পারিবারিক ভাবে শিলমান্দী ইউনিয়নের বাঘহাটা এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে মাহবুব আলমের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পরই মাহবুব জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়া চলে যায়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় মাহবুবের বাড়ির লোকজন সানজিদাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দিতো।
সানজিদার বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যাওয়ায় তার পক্ষে টাকা এনে দেয়া সম্ভব হয়নি। যার কারণে প্রতিনিয়ত তাকে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করতে হতো। পাশাপাশি মাহবুবও সানজিদাকে তার হাত খরচসহ সংসার খরচের জন্য কোন রকম টাকা-পয়সা দিতো না। যার কারণে সে বেশির ভাগ সময় বাপের বাড়িতেই থাকতো।
তিনমাস আগে মাহবুব মালয়েশিয়া থেকে দেশে এসে সানজিদাকে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। সে একমাস দেশে থেকে আবার মালয়েশিয়া চলে যায়। রবিবার সন্ধ্যায় মাহবুবের ভাই মাইনুল সানজিদার বাবাকে ফোন দিয়ে বলে ‘ভাবী গলায় ফাঁস দিয়েছে, আপনারা দ্রুত আসেন।’ পরে তারা সানজিদার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় বারান্দার মেঝেতে মরদেহটি শোয়ায়ে রাখা আছে।
বাড়িতে সে সময় কেউই ছিলো না। সানজিদাকে হত্যা করে তার মৃত্যূর খবর বাবাকে মোবাইলে জানিয়ে সবাই গা ঢাকা দিয়েছে বলে ধারণা করছে পরিবারের সদস্যরা ।এসময় জাতীয় জরুলি সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ ফোন করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।
নিহত সানজিদার বাবা আলতাফ হোসেন বলেন, তারা আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আর এই হত্যাকান্ডকে ভিন্ন ভাবে রূপ দিতে আমাকে ফোন দিয়ে ফাঁসি নেয়ার কথা বলে। তারা টাকা জন্য আমার মেয়েকে প্রায় নির্যাতন করতো।
এনিয়ে এলাকায় একাধিকবার শালিস-দরবার করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কোন কিছুতেই তাদের অত্যাচার থামেনি। আমার মেয়ে দুই মাসের অন্তস্বত্বা ছিলো। গত ৬ দিন আগে মেয়েকে মিথ্যা বলে হাসপাতালে নিয়ে বাচ্চাটিকে নষ্ট করে ফেলে। আর আজকে আমার মেয়েকে মেরে সবাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে। আমি হত্যার বিচার চাই।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা এঘটনায় কাজ করছি। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।