স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর শিবপুরে দুর্গা প্রতিমার কাছ থেকে ময়ূরপুচ্ছ ভেঙ্গে নেওয়ার সময় মনির হোসেন (৪০) নামে একজনকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে ।
এসময় স্থানীয় হিন্দু ধর্মালম্বীরা তাকে ময়ূরপুচ্ছ নিতে বাঁধা দিলে সে তার হাত দিয়ে মোচর দিয়ে দূর্গা প্রতিমার সাথে থাকা অসুরের প্রতিমার হাত ভাঙ্গার চেষ্টা করে। এতে অসুর প্রতিমার হাতে বড় একটি ফাঁটলের সৃষ্টি হয়।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টায় উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের ভিটি চিনাদী গ্রামের ভিটি চিনাদী সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃত ব্যক্তি একই উপজেলার একই গ্রামের নিসার উদ্দিন নিসার ছেলে।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ চন্দ্র বর্মণ জানান, গতকাল রাতেই প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হওয়ায় সমস্ত রাত আমরা প্রতিমা পাহাড়া দিয়েছি।
সকালে নাস্তা করার জন্য নয়টার দিকে বাড়িতে গেলে আমার কাছে প্রতিমা ভাঙ্গার খবর আসে। পরে সেখানে গিয়ে দেখতে পাই দূর্গা প্রতিমার সাথে থাকা অসুর প্রতিমার হাতে বড় ফটল আর কার্তিক প্রতিমার বাহন ময়ূরের ময়ূরপুচ্ছ ছেঁড়া। তিনিই যে প্রতিমা ভেঙ্গেছে তা কেউ দেখেছে কি না..?
এমন প্রশ্নের জবাবে দিলিপ বলেন, ময়ূরপুচ্ছ গুলো ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার কোষাধ্যক্ষ মঙ্গল বর্মন তাকে জিজ্ঞেসা করে এগুলো তিনি কেন ভেঙ্গে এনেছেন, উত্তরে মনির জবাব দেন,'এনেছি ভালো করেছি, আমার লাগবে এগুলো' বলে তিনি চলে যান।
শিবপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিল্পব চক্রবর্তী জানান, সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দশটার মধ্যে মনির হোসেন মন্দিরে ঢুকে দূর্গা প্রতিমার সাথে থাকা অসুর প্রতিমার হাত ফাটিয়ে কার্তিক প্রতিমার ময়ূরপুচ্ছ ভেঙ্গে নিয়ে যায়। পরে গ্রাম পুলিশ তাকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক শামীম মোল্লা জানান, ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারি মানসিক ভারসাম্যহীন মনির নামে এক ব্যক্তি প্রতিমার সাথে থাকা ময়ূরপুচ্ছ আনতে সেখানে যায়। পরে স্থানীয় হিন্দুধর্মালম্বীরা তাকে এগুলো নিতে বাঁধা দিলে তার দেওয়া আঘাতে একটি প্রতিমার হতে ফাঁটল ধরে। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
শিবপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ তালুকদার বলেন, প্রতিমা তো ভাঙ্গে নাই, সে ময়ূরপুচ্ছ আনতে সেখানে গিয়েছিলো। এসময় ময়ূরপুচ্ছ ছেঁড়ার সময় তার আঘাতে একটি প্রতিমার হাত হালকা ফেটে গেছে। আমরা তাকে গ্রেফতার করে থানা নিয়ে আসি।
এ ব্যাপারে শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. সজিব বলেন, আমি ঘটনাস্থলেই আছি। দূর্গা প্রতিমার সাথে যে একটা ময়ূর ছিলো। ময়ূরের সাথে যে ময়ূরপুচ্ছটা থাকে তা মানসিক ভারসাম্যহীন একজন নিয়ে গেছে। এমন কোন ভাংচুরের বিষয় সেখানে নাই।