• নরসিংদী
  • সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

ভূমধ্যসাগরে ট্রলার ডুবি : নরসিংদীর নিহত ১, নিখোঁজ ১৩ যুবক


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০:০২ পিএম
ভূমধ্যসাগরে ট্রলার ডুবি : নরসিংদীর নিহত ১, নিখোঁজ ১৩ যুবক
নিহত যুবকের স্বজনের কান্না

স্টাফ রিপোর্টার: দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে সমুদ্র পথে  ইতালি যাওয়ার সময় ট্রলার ডুবিতে আব্দুল নবী (৩০) নামে নরসিংদীর একজন নিহত ও ১৩ যুবক নিখোঁজে হয়েছে। 

তারা সবাই নরসিংদীর বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ট্রলার ডুবিতে আব্দুল নবীর মৃত‍্যূ ও অন‍্যদের নিখোঁজের খবর পায় স্বজনরা।

নিহত  আব্দুল নবী রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের  বড়চর গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছোট ছেলে। সে আট ভাইবোনের মধ‍্যে সবার ছোট। এর আগে সে সৌদি  প্রবাসী ছিল।

নিখোঁজ যুবকদের মধ্যে ৬ জনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী বেলাব উপজেলার টান লক্ষীপুর ও চর লক্ষীপুর গ্রামে এবং একজনের কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায়। বাকিরা জেলার অন্যান্য উপজেলা বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

পরিচয় পাওয়া নিখোঁজ ৬ যুবকরা হলো বেলাব উপজেলার টান লক্ষীপুর ও চর লক্ষীপুর এলাকার বিল্লাল মিয়ার ছেলে সৈকত (২০), রহিম মিয়ার ছেলে আবু তাহের (২৭),  রতন মিয়ার ছেলে জহিরুল ইসলাম (১৯), আউয়াল মিয়ার ছেলে উজ্জল (১৮), ওবায়দুল্লাহর ছেলে রহমত উল্লাহ (২০), মোক্তার হোসেন এর ছেলে জিহাদ (১৯) এবং কুলিয়ারচর উপজেলার বড় ছয়সুতি এলাকার বাছেদ মিয়ার ছেলে স্বপন (২৭)। এসব যুবক ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ করে দালাল চক্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে।

জানা যায়, নিহত নবীসহ নিখোঁজ যুবকেরা ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ করে দালাল চক্রের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে।

শুক্রবার (২৩ জুন) সকালে নিহত আব্দুল নবীর বাড়িতে গেলে তার ভাই ও মা জানায়, আব্দুল নবী এর আগে ৫ বছর সৌদী আরব থেকে । সৌদী থেকে দেশে ফিরে চার মাস আগে সে দালাল চক্রের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ইতালি পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে। এক মাস আগে পরিবারের সাথে ফোনে শেষ কথা  হয়েছিল আব্দুল নবী’র। এরপর তার সাথে আর কোন যোগাযোগ হয়নি। বৃহস্পতিবার ২২ জুন রাতে খবর আসে আব্দুল নবীর মরদেহ পাওয়া গেছে।

একই চিত্র বেলাব উপজেলার টান লক্ষীপুর ও চর লক্ষীপুর গ্রামে। তবে ওই দুই গ্রামের কারোই এখনও মৃত‍্যূ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারা সবাই নিখোঁজ রয়েছে।

বেলাব উপজেলার টান লক্ষীপুর ও চর লক্ষীপুর গ্রামে গিয়ে নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নিখোঁজ যুবকের সাথে বাবা মায়ের শেষ কথা হয় প্রায় ১ মাস আগে। তখন তারা পরিবারকে জানিয়েছিলো  লিবিয়া থেকে সমুদ্র পথে ইতালি যাওয়ার জন‍্য তাদেরকে গেম ঘরে নেওয়া হচ্ছে।

এরপর অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলতে পারেনি। তাদের সন্তান জীবিত আছে নাকি মারা গেছে, এ নিয়ে বাবা মা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 

এদিকে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ হওয়ার খবরে বেলাব উপজেলার টান লক্ষীপুর গ্রামের মনা মিয়ার ছেলে দালাল আলমের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আহাজারি করতে দেখা যায় নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের লোকজনদের। এসময় ভীড় জমিয়েছেন আশপাশের লোকজনও। 

নিহত আব্দুল নবীর বড় ভাই মাহ আলম বলেন, এর আগেও তারা ইতালি যাওয়ার পথে ৮/১০ কি:মি: যেতে না যেতেই বোট ফেটে যাওয়ায় তারা ভয়ে ফিরে আসে। পরে দালালের অভিভাবকদের সাথে গ্রাম্যসালিসে বসে আমাদের পাসপোর্ট ফেরত দিতে বলি, কিন্তু সে দেয়নি। জোড় করে সে লোকগুলোকে নিয়ে যায়। 

উল্লেখ্য ডুবে যাওয়া ট্রলারটিতে মোট ১১৫ জন যাত্রী ছিল, তাদের মধ্যে ২৮ জন বাংলাদেশি। নিখোঁজের মধ‍্যে ১৩ জনের বাড়ি নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ জেলায়  বলে জানা যায়। 

এ ব‍্যাপারে পর্যায়ক্রমে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) অনিবার্ণ চৌধুরী, রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান ও বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ'র সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়টি তারা কেউ অবগত নন বলে জানান। 

জাগোনরসিংদী টুয়েন্টিফোর ডটকম/শহজু 
 

নরসিংদীর খবর বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ