স্টাফরিপোর্ট: তাহিরপুর : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ডক্টরস্ চেম্বারসহ হাফ ডজন (৬টি) অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট এসব অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার মোবাইল কোর্ট পরিচালানার মাধ্যমে বন্ধ করে দেয়ার পর জরিমানার অর্থ আদায় করেছেন শনিবার দিনভর।
রোববার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দফতরের দায়িত্বশীল সুত্র এতথ্য নিশ্চিত করেন।
সরকারের দেয়া যথাযথ নীতিমালা ও অনুমোদন না নিয়েই টানা কয়েক বছর ধরে ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে সাধারণ রোগীদের সাথে বিভিন্ন রোগের প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় টেষ্টের বিপরীতে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়ায় উপজেলার বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাটের চাল পট্রিতে একটি বহুতল ভবনে থাকা বাদাঘাট পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ডক্টরস চেম্বারের পরিচালককে ৫০ হাজার টাকা, বাদাম পট্রি কাম –কলেজ রোডের মোড়ে লাইফ কেয়ার মেডিকেল সার্ভিসেসের পরিচালককে ৫০ হাজার টাকা,তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থাকা ন্যাশনাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালকে ১০ হাজার টাকা, মেডিপ্লাস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালককে ১০ হাজার টাকা সহ চারটি ডায়াগনস্টিক সেন্টাররের পরিচালক দোষ ন্বীকার করায় তাদের নিকট থেকে মোবাইল কোর্ট ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
অপরদিকে মোবাইল কোর্টের উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে উপজেলার বাদাঘাট বাজারে থাকা কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও সীমান্ত বাজার লাউরগড়ে থাকা জনসেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে পরিচালকদ্বয় কৌশলে চলে যাওয়ায় এ দুটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। এরপর জরিমানা আদায়কৃত চার ডায়গনস্টিক সেন্টারসহ অনুমোদনহীন ৬টি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন মোবাইল কোর্ট।
২০১৯ সাল থেকে সরকারের নীতিমালা বহি:ভুর্তভাবে অনুমোদন ছাড়াই কিভাবে টিনশেড ঘরের মধ্যে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন এমন প্রশ্নের উওর জানতে চাইলে উপজেলার বাদাঘাটে থাকা লাইফ কেয়ার মেডিকেল সার্ভিসেসের পরিচালক কাজি আবুল ফজল বলেন, ২০১৯-২০ সালে অনুমোদন নিয়েই ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু করি।
মোবাইল কোর্ট জানিয়েছে কোন অনুমোদন ছিল এমন প্রমাণাদি ওই ডয়াগনষ্টিক সেন্টার পরিচালক দেখাতে পারেননি,পুরোটাই ভুয়া।
২০১৮ সাল থেকে চালু হওয়া উপজেলার বাদাঘাট পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ডক্টরস চেম্বারের পরিচালক রফিকুল ইসলামের নিকট তাদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি চালুর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, শুরুর দিকে সি ক্যাটাগরিতে আমরা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারটি চালুর জন্য অনুমোদন প্রাপ্ত হই, এরপর প্রতি অর্থ বছরে নবায়ন কাজ সম্পন্ন করি। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থ বছরে অনলাইনে আবেদন করলেও আমাদের ডায়গনস্টিক সেন্টারটি বি ক্যাটাগরিতে রূপান্তরিত হওয়ায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি চালুর জন্য নতুন করে অনুমোদন দেয়া হয়নি।
তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা আল ইমরান,রেজোয়ান সিদ্দিক,লাবিব তালহা সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজন অভিযোগ তুলেছেন,সরকারি অনুমোদন ছাড়া বছরের পর বছর ধরে এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আড়ালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কতিপয় এমবিবিএস, উপজেলা বাহিরের কথিপয় এমবিবিএস এমনকি কোন কোন হাতুরে পল্লী চিকিৎসকগণ বিভিন্ন রোগীদের প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় টেষ্টের জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রোগীদের পাঠিয়ে থাকেন, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে কম্পিউটারাইজড স্বাক্ষরে টেষ্ট রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে বলে মোটা অংকের কমিশন প্রাপ্তির পাশাপাশি গোপনে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে এসব ভুঁইফোড় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শেয়ার কিনেছেন দু’হাতে টাকা কামানোর জন্য। এসব বিষয়ে পুন:তদন্ত করে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছেন তারা।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. রায়হান কবির বলেন, 'অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে টেষ্টের নামে টাকা আদায়ের সুযোগ দেয়া হবেনা।'