নিজস্ব প্রতিনিধি: নরসিংদীর পলাশে ঘরের ভিতরে ঢুকে কলেজ পড়ুয়া স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনার ৬ দিন পর সঞ্জয় চন্দ্র ভৌমিক (৩৫) নামে এক ব্যক্তি
নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করর খবর পাওয়া গেছে। সে গত (২৯ জুন) বৃহস্পতিবার সিলেট শহরের দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায় গলা ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা যায়।
সোমবার (৩ জুলাই) দুপুরে তার এ আত্মহত্যার তথ্যটি নিশ্চিত করেন পলাশ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামছুল হক।
এর আগে, গত (২৩ জুন) শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের বড়িবাড়ি প্রামে কলেজ পড়ুয়া স্ত্রী বিনা মিত্র (১৮)কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠে স্বামী সঞ্জয় চন্দ্রের বিরুদ্ধে। পরদিন শনিবার (২৪ জুন) সকালে বুকে ছুরিবিদ্ধ অবস্থায় ওই কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে পলাশ থানা পুলিশ।
ছুরিকাঘাতে নিহত বিনা মিত্র উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের বরাব (বড়িবাড়ি) গ্রামের মুকুল মিত্রের মেয়ে ও ঘোড়াশাল মুসাবিন হাকিম ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
এ ঘটনায় (২৫ জুন) রবিবার নিহত বিনা মিত্রের বাবা মুকুল মিত্র বাদী হয়ে সঞ্জয় চন্দ্র ভৌমিকের নাম উল্লেখ করে পলাশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী সঞ্জয় চন্দ্র পলাতক ছিল। নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, ঘোড়াশাল পৌর এলাকার লাগালিয়া গ্রামের জগদীস মিত্রের ছেলে সঞ্জয় মিত্রের সাথে বিনা মিত্রের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই বছর আগে মা-বাবাকে না জানিয়ে সঞ্জয়কে বিয়ে করেন বিনা মিত্র। বিয়ের দেড় বছর শ্বশুরবাড়িতে থাকলেও পারিবারিক কলহের কারণে গত ছয় মাস যাবত বিনা তাঁর মা বাবার সাথেই ছিলেন।
তবে মাঝেমধ্যেই সঞ্জয় তাদের এই বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। বিনা মিত্রের মা উর্মিলা মিত্রের ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাড়িসংলগ্ন বরাব মন্দিরে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে রথযাত্রার প্রসাদ খেতে গিয়েছিল বিনা মিত্র। পরে বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে পড়াশোনা করতে বসে সে।
অন্যদিকে তাঁর মা উর্মিলা মিত্র কবিরাজি চিকিৎসা নিতে পাশের একটি বাড়িতে যান। রাত সোয়া ৯টার দিকে উর্মিলা মিত্র বাড়ি ফিরে স্বামী আর ছেলেকে একটি ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এসময় অপর আরেকটি ঘরের মেঝেতে বুকে ছুরিবিদ্ধ অবস্থায় বিনার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। এ অবস্থায় উর্মিলা মিত্র ডাক-চিৎকার করতে শুরু করলে প্রতিবেশী ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে থানা-পুলিশে খবর দেন।
এ বিষয়ে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, বিনা মিত্রকে হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই তার স্বামী সঞ্জয় চন্দ্র ভৌমিক পলাতক ছিল। স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের অপরাধবোধ থেকেই হয়তো সে আত্মহত্যা করেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।